বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই আবাস যোজনা (Awas Yojana) প্রকল্পে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেওয়া শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মত ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে রাজ্যবাসীর মাথার উপর পাকা ছাদ তৈরি করে দিতে মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে প্রথম কিস্তির বরাদ্দের টাকা।
আবাসের (Awas Yojana) বাড়ি তৈরিতে বড় আপডেট
প্রসঙ্গত লক্ষ্যমাত্রা ১২ লক্ষ হলেও, আবাস প্রকল্পে (Awas Yojana) প্রথম কিস্তির বরাদ্দে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু আছে প্রায় অর্ধেক সংখ্যায়। জানা যাচ্ছে ৫ মার্চ পর্যন্ত জেলা ভিত্তিক যে তথ্য রয়েছে তাতে প্রায় ৬.২২ লক্ষ বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। যার মধ্যে ‘লিন্টেন’ ঢালাই পর্যায়ে কাজ হয়েছে ১.২৮ লক্ষ বাড়িতে। প্রশাসনের একটি অংশের দাবি, এই অগ্রগতি তুলনামূলক অনেকটাই মন্থর। তবে আধিকারিকদের একাংশের দাবি দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এই নির্মাণ গতির হার আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরি জন্য প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দিতে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। শুরু থেকেই এই প্রকল্পে অনিয়ম রুখতে কড়া নজরদারি চলছে প্রশাসনের। জানা যাচ্ছে, আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) প্রথম কিস্তির টাকা বরাদ্দ করার পর আরও এক দফায় প্রায় ৬.৮৭ লক্ষ যাচাই শুরু হয়েছে প্রত্যেক জেলায়। যার মধ্যে মোট ৬.২২ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত নতুন করে গতি বাড়ানোর ব্যাপারে রাজ্যের উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোন চাপ আসেনি বলেই জানাচ্ছেন জেলা কর্তাদের একাংশ।
অন্যদিকে অর্থ-কর্তাদের একাংশের দাবি এই ১২ লক্ষ্য উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে চলতি অর্থ বর্ষে প্রায় ৭,২০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। চলতি মাসে অর্থবর্ষ শেষ হচ্ছে। তা মনে করা হচ্ছে মে জুন মাস নাগাদ নতুন অর্থবছরের আওতায় দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ ছাড়তে কোন সমস্যা হবে না নবান্নের। বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান সম্ভবত আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) গতি নিয়ে আপাতত কোনো আপত্তি উঠছে না।
প্রসঙ্গত এই সরকারি প্রকল্প থেকে দীর্ঘ দুই বছর ধরে বাংলাকে বঞ্চিত করে রেখেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। এই অভিযোগে একাধিকবার সরব হয়েছে রাজ্য। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলেও এই প্রকল্পে ১২ লক্ষ উপভোক্তা ছাড়াও আরো ১৬ লক্ষ উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হবে। জানা যাচ্ছে, এই বছরের মে-জুন মাস নাগাদ ৮ লক্ষ ও ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৮ লক্ষ উপভোক্তাকে বরাদ্দ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এবার বিপাকে রাজ্যের শিক্ষকরা! বিরাট পদক্ষেপ নিল CBI, দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়
উল্লেখ্য বছর ঘুরলে রাজ্যে রয়েছে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একের পর এক নতুন বরাদ্দের কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। এই ১৬ লক্ষ উপভোক্তাকে আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য মাথাপিছু এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দিতে হলে সব মিলিয়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অবশ্য সংশ্লিষ্টদের প্রথম কিস্তির টাকা দিলে মাথাপিছু ৬০ হাজার টাকা হিসাবে মোট খরচ হবে ৯,৬০০ কোটি টাকা। তারপরেও প্রথম দফার ১২ লক্ষ উপভোক্তাদের দ্বিতীয় কিস্তির জন্য বরাদ্দ করতে হবে আরও প্রায় ৭,২০০ কোটি টাকা। সামনের মাস থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে নতুন অর্থ-বছর। নতুন অর্থবর্ষে বাজেটে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের খাতে প্রায় ১৫ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ফলে সেই অতিরিক্ত খরচের সংস্থানও করতে হবে নবান্নকে।