বাংলাহান্ট ডেস্ক : হাসিনার পদত্যাগ, প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণ, আবার সেনাবাহিনীর অন্দরেই ষড়যন্ত্র করে সেনাপ্রধানকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা, বদলের বাংলাদেশে টুইস্ট যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। এই আবহে ভারত থেকে নেওয়া বিপুল পরিমাণ ঋণের টাকায় বাংলাদেশে (Bangladesh) চলছে দুটি মহাসড়ক নির্মাণের কাজ। আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত এবং ময়নামতি থেকে ধরখার সড়ক পর্যন্ত প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ ঋণ দিয়েছে ভারত (India)।
বাংলাদেশকে (Bangladesh) ঋণ জোগাচ্ছে ভারত
৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল, কসবা, ধরখার হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের মহাসড়কের মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা যুক্ত হতে চলেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) আশুগঞ্জ নৌবন্দরের সাথে। অন্যদিকে, ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা ব্যয় করে বাংলাদেশের কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ধরখার সড়কটিও উন্নীত হবে চার লেনের রাস্তায়। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করা পণ্য সহজেই পরিবহন করে নিয়ে আসা যাবে ত্রিপুরা ও আসামে।
আরও পড়ুন : ঐতিহাসিক! বাবার সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার নিয়ে বড় রায় দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
এই দুই সড়ক (Road) প্রকল্পে ভারতের লাভ থাকলেও, বাংলাদেশের কি আদৌ কোনও লাভ হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে বিশেষজ্ঞদের মনে। বাংলাদেশের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, দুটি মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে আগরতলার সাথে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে সিলেট ও চট্টগ্রামের মধ্যে। এই প্রকল্প দুটিতে লাভবান হবে ভারত-বাংলাদেশ দু’পক্ষই।
আরও পড়ুন : মঞ্জুর হয়েছে আবেদন! সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তিলোত্তমার মা বললেন, ‘মেয়ের রক্তাক্ত…
অন্যদিকে, বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির জানিয়েছেন, এই মহাসড়ক দুটি কেন অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, এতে বাংলাদেশের কতটা লাভ হবে, সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে। ময়নামতি-ধরখার মহাসড়ক প্রকল্প পুনর্মূল্যায়নের ভাবনাচিন্তা চলছে। যদি বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বার্থের অনুকূল না হয় তাহলে সরকার প্রকল্প বাস্তবায়িত করবে না।
বাংলাদেশের ময়মনামতি-ধরখার সড়ক প্রকল্পের ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার মধ্যে ২ হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ হিসাবে দেবে ভারত। ময়মনামতি-ধরখার সড়ক প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক শামীম আল মামুন বলেন, দুই লেনের সরু রাস্তায় বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা অংশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। চার লেনের রাস্তায় উন্নীত হলে সিলেট থেকে কুমিল্লা, চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। শামীম আল মামুনের দাবি, এই প্রকল্প দুই দেশের জন্যই ‘উইন-উইন সিচুয়েশন’। সেদিক থেকে দেখতে গেলে লাভ হবে দুপক্ষেরই।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাদীউজ্জামান আবার দাবি করছেন, উপর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের লাভ। তবে সামগ্রিকভাবে বিচার করলে দেখা যাবে এই দুটি প্রকল্পে ঋণ প্রদানকারী ভারতের লাভই বেশি হতে চলেছে। ভারত একবার ঋণ দেবে, তবে মহাসড়কের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ জোগাতে হবে বাংলাদেশকে। ভারতীয় পণ্য পরিবহন করে সেই টাকা ওঠে কিনা সেটাও বড় প্রশ্ন।