বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে নতুন করে মাথা ছাড়া দিয়েছে ধর্মীয় সংঘাত। এমনকি বিধানসভায় রাজ্যের শিক্ষার সামগ্রিক ব্যবস্থা নিয়ে যে বিতর্ক হওয়ার কথা ছিল তার মধ্যেও ঢুকে পড়েছে ধর্ম। এরইমধ্যে এবার শিক্ষা দপ্তরের বাজেট নিয়ে বিতর্ক বয়কট করে রাজ্য সরকারকে ‘হিন্দু বিরোধী’ বলে তোপ দাগে বিরোধীদল বিজেপি। এরপর বিরোধীদের ‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ করার অভিযোগ এনে পাল্টা সরব হয় গোটা মন্ত্রীসভা।
‘হিন্দু’ শব্দ বাদ দিতেই সরব শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)
অন্যদিকে ধর্ম-বিতর্ক বিতর্কের জেরে অধিবেশনে বিজেপির প্রস্তাব থেকে ‘হিন্দু’ শব্দ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্পিকার। তাঁর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে, বুধবার বিমানের নির্বাচনী কেন্দ্র বারুইপুরে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে সভা করার কথা তাঁর।
স্পিকার অবশ্য কটাক্ষের সুরে শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) বলেছেন, ‘বারুইপুরের প্রতিনিধি হিসেবে অনুরোধ করছি বিজেপির বিধায়করা যেন সেখানকার উন্নয়নমূলক কাজগুলি দেখে আসেন। বাইপাস, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং এই এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকায় গত ১০ বছরে পানীয় জল সরবরাহের যে কাজ হয়েছে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে তা তাঁদের দেখা প্রয়োজন!’
প্রসঙ্গত বিরোধীদের অনুপস্থিতিতে বিধানসভার আড়াই ঘন্টার আলোচনার সময় কমে হয় দেড় ঘন্টা। বিধানসভায় শুধুমাত্র শাসকদলের বিধায়করা বিতর্কে থাকায়, তা হয়ে ওঠে তাঁদের একে অপরের প্রশংসার আসর। জানা যাচ্ছে, প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বিষয় নিয়ে যে সমস্ত চর্চা হয়েছে, তা ছিল মূলত সরকারি পরিসংখ্যানের প্রশ্নহীন পরিবেশন।
বিধানসভার চলতি অধিবেশনে এ দিনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল ধর্ম। প্রশ্নোত্তর-পর্ব শেষ হতেই ‘দোলের দিন হিন্দু’দের উপর হওয়া আক্রমণ নিয়ে আলোচনা দাবি জানায় বিজেপি। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠ করতে দিলেও তা নিয়ে আলোচনার দাবি খারিজ করে দেন। তারপরেই সরকার বিরোধী স্লোগান দিয়ে সভাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপির বিধায়কেরা। তাঁদের মুখে এদিন শোনা যায়, ‘হিন্দু-বিরোধী সরকার, আর নেই দরকার’
আরও পড়ুন: বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর! ভাগ হল কাজের দায়িত্ব
বিজেপির এহেন আচরণের বিরোধিতা করেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, ব্রাত্য বসুরা। উঠে দাঁড়িয়ে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে বক্তৃতাও করেন সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। এদিন শিক্ষা দফতরের বাজেট বিতর্কের দ্বিতীয়ার্ধেও যোগ দেননি বিজেপির বিধায়কেরা। বরাদ্দে অনুমোদন চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এদিন বলেন,’বিরোধীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো আলোচনায় পাওয়া যায় না। শুধু ধর্মের মেরুকরণ এবং অন্য ধর্মকে নিচু-ভাষায় এঁরা আক্রমণ করেন।’
বাংলার ফজলুল হক মন্ত্রিসভার কথা টেনে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘শিক্ষা-ভাবনা’র কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত শিক্ষা দফতরের বাজেট বিতর্কে বিজেপি না-থাকলেও স্কুল স্তরে শিক্ষার পরিকাঠামো নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের স্কুলের সমস্যা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন তিনি।