IVF-এ ব্যবহার হয়েছে কার শুক্রাণু? নিরুত্তর ক্লিনিক, শিশুর মৃত্যুর পরেই হাই কোর্টে দম্পতি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিয়ের পর সন্তান না হওয়ায় আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার জন্য কলকাতারই এক দম্পতি যোগাযোগ করেছিলেন একটি ক্লিনিকের সাথে। সেই ক্লিনিকের বিরুদ্ধেই এবার এক গুরুতর অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছেন ওই দম্পতি। আদালত সূত্রে খবর চলতি সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে।

৫ লাখ ক্ষতিপূরণ ফিরিয়ে হাই কোর্টে (Calcutta High Court) সন্তানহারা দম্পতি

আইভিএফ পদ্ধতিতে পরপর দু’বার সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর হতাশা ঘিরে ধরেছিল ওই দম্পতিকে। কিন্তু সহজে হাল ছাড়েননি তাঁরা। তাই অনেক কষ্টে মনের জোর এনে তৃতীয়বারের চেষ্টায় আইভিএফ পদ্ধতিতে তাদের ঘরে আসে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসেই তাদের আনন্দের মুহূর্ত পরিণত হয় বিষাদে।

জন্মের পর থেকেই রোগে ভুগতে শুরু করে একরত্তি শিশুকন্যা। এমনকি সে নাকি খুব দুর্বলও ছিল। শেষ পর্যন্ত জানা যায়, অতটুকু বয়সেই তার শরীরে বাসা বেধেছে, মারণ রোগ ক্যান্সার। তবে চিকিৎসকরা জানান একমাত্র ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট’ পদ্ধতিতে ওই শিশুর চিকিৎসা করানো সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসা করাতে গিয়ে সামনে আসে এক বড় সত্যি। জানা যায়, শিশুর সঙ্গে তাঁর বাবা-মায়ের ‘বোন ম্যারো’র কোনও মিলই নেই। এমনকি তাঁদের ডিএনএ-ও মিলছে না। 

আরও পড়ুন: বিষ্ণুপুর অন্ত প্রাণ! সকলের জন্য আবার জোড়া সুখবর নিয়ে হাজির সৌমিত্র খাঁ

অন্যদিকে ক্রমশ খারাপ হতে থাকে ওই শিশুকন্যার শারীরিক অবস্থা। মেয়ের প্রাণ বাঁচানোর জন্য দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে ওই দম্পতি সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে আবেদন জানান,যাতে শিশুর ‘বায়োলজিক্যাল’ বাবা-মায়ের খোঁজ দেওয়া হয়। এমনকি কার শুক্রাণু ব্যবহার করা হয়েছে জানতে চাওয়া হয় সেই বিষয়েও। কিন্তু প্রথমে নাকি ওই ক্লিনিক সেই পরিচয় জানাতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত একজনের নাম জানানো হলেও দেখা যায় ওই শিশুকন্যার সঙ্গে তার ডিএনএ-ও মিলছে না! চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে একের পর এক এই ধরনের জটিলতার কারণে ২০২৩ সালে মাত্র চার বছর বয়সে এক প্রকার বিনা চিকিৎসাতে মৃত্যু হয় ওই শিশুকন্যার।

Calcutta High Court Justice Amrita Sinha on director Bidula Bhattacharjee case

সংশ্লিষ্ট ওই ক্লিনিকের দাবি, দম্পতির অনুমতিতেই নাকি গোটা পদ্ধতি হয়েছে। যদিও মামলাকারী দম্পতির গুরুতর অভিযোগ ওই সংস্থা নাকি,সই জাল করেছে। তাই ইতিমধ্যেই ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই দম্পতি। জানা যাচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সমস্ত অভিযোগ শোনার পর গোটা বিষয়টিতে ক্লিনিকের গাফিলতি রয়েছে বলে জানায়। একই সঙ্গে ওই দম্পতিকে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও তাঁরা ওই ক্ষতিপূরণ ফিরিয়ে দিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লিনিকের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর