বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) দীর্ঘদিন ধরে সরগরম বাংলা। এই দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালীর। তার মধ্যে অনেকে এখনও জেলবন্দি, অনেকে জামিন পেয়েছেন। এবার যেমন জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ‘ঘনিষ্ঠ’ এক অভিযুক্ত। বুধবার কলকাতার বিচারভবনে জামিনের আর্জি জানান তিনি।
নিয়োগ মামলা (Recruitment Scam) থেকে জামিন চাইলেন কে?
নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে জোরকদমে তদন্ত করছেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দারা। সেই সূত্রেই গত বছর নভেম্বর মাসে বেহালা নিবাসী সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে (Santu Ganguly) গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ এই অভিযুক্তই এবার জামিন চেয়ে বিচারভবনের দ্বারস্থ হলেন।
শুধু সিবিআই নয়, ইডির চার্জশিটেও নাম ছিল নিয়োগ মামলার (Recruitment Scam) এই অভিযুক্তের। তাঁর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জানা যাচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অয়ন শীলকে জেরা করার সময় সন্তুর নাম প্রথম উঠে এসেছিল। একদা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। সন্তুর সঙ্গে নিজের যোগাযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন অয়ন।
আরও পড়ুনঃ ‘এখনই FIR করে হেফাজতে নিয়ে জেরার নির্দেশ দেব’! বড় মন্তব্য ‘ক্ষুব্ধ’ হাইকোর্টের
তিনি জানিয়েছিলেন, ২০১২ ও ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগের নামে নানান জেলার এজেন্টরা তাঁকে ৪৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তিনি পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকদের জেরায় একই কথা জানিয়েছিলেন শান্তনু। এবার জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন সেই সন্তুই।
নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম এই অভিযুক্তের আইনজীবী বুধবার আদালতে বলেন, এই মামলায় যে ১০ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই অভিযোগ এনেছিল, তাঁদের মধ্যে ৮ জন ইতিমধ্যে জামিন পেয়েছেন। সন্তুর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সির মূল অভিযোগ ছিল, তিনি এই দুর্নীতিতে অয়ন ও কুন্তলের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন করেছেন। সেই অয়ন ও কুন্তলও সিবিআইয়ের (CBI) মামলায় জামিন পেয়েছেন।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে সন্তুকে ১০ বার তলব করা হয়েছিল। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সন্তুর আইনজীবী আদালতে বলেন, শুরু থেকেই তদন্তে সিবিআইয়ের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে তাঁর মক্কেল।
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতির এই অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের জোরালো বিরোধিতা করেছে সিবিআই। তারা জানায়, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীদের থেকে প্রায় ৬ কোটি টাকা তুলেছে সন্তু। তিনি এজেন্টদের মাধ্যমে টাকা তুলেছেন। সেই সঙ্গেই একজন সাক্ষীকে ফোন করে ভয় দেখানোরও অভিযোগ উঠেছে।
সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ মামলায় (Recruitment Scam) সন্তুকে জামিন দেওয়ার আগে এই দুর্নীতিতে তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখা উচিত। এবার আদালতের তরফ থেকে কী নির্দেশ দেওয়া হয় সেটাই দেখার।