বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আদালতের নির্দেশে রাজ্যের (West Bengal) শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির দায় ভোগ করতে হচ্ছে যোগ্য-চাকরিপ্রার্থীদের। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায় সামনে আসতেই একধাক্কায় চাকরিহারা হয়েছেন ২৬ হাজার জন। যার ফলে আগামী দিনে রাজ্যের শিক্ষা-ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক প্রভাব তো পড়তে চলেইছে, সেই সাথে একেবারে অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে এতগুলো পরিবারের ভবিষ্যৎ। সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে বিতর্কের মাঝেই জল্পনা তৈরী হয়েছে বেসরকারি সংস্থায় ছাঁটাই-এর প্রসঙ্গ নিয়েও। অনেকেই তুলনা টানছেন বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের সাথে। কলমের এক আঁচড়ে রাতারাতি চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫২ জন। তাই প্রশ্ন উঠছে এই ঐতিহাসিক রায়ে বাংলার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কি সত্যিই বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছাঁটাইকেও ছাপিয়ে গেল?
চাকরিহারার তালিকায় গুগল-ফেসবুককেও টেক্কা দিচ্ছে বাংলা (West Bengal)?
সরকারি চাকরির প্রতি সাধারণ মানুষের ভরসা বরাবরই একটু বেশি। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরি পাওয়া এখনকার দিনে, ‘হাতে চাঁদ’ পাওয়ার সমান। কিন্তু তবুও সরকারি চাকরি তে যে নিরাপত্তা আছে তার জন্যই সবাই চোখ বুজে সরকারি চাকরির ওপরেই ভরসা করেন। কিন্তু এবার সমস্ত ধারণাই যেন ভুল প্রমাণ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক নির্দেশে। এতদিন পর্যন্ত ধারণা ছিল সরকারি চাকরিতে একবার যোগ দিলে আর চাকরি হারানোর ভয় থাকে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সেই ধারণাও ভুল প্রমাণ করে দেখাল।
মোটা টাকার বিনিময় যোগ্যদের তালিকায় নাম ঢোকানো হয়েছিল অযোগ্যদের। আদালতে দীর্ঘ শুনানির পর পিরেও সেই তালিকা থেকে আলাদা করা সম্ভব হয়নি অযোগ্যদের। যার ফলে সেই দুর্নীতির দায় এবার ভুগতে হচ্ছে যোগ্য শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদেরও। প্রসঙ্গত বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতদের সবসময় চাকরি হারানোর একটা ভয় থেকে যায়। বিশেষ করে করোনার সময় থেকেই বেসরকারি চাকরিতে ছাঁটাই চলছে। ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি রিটেল, প্রযুক্তি, সার্ভিস অ্যান্ড কনজিউমার এবং মিডিয়ার ক্ষেত্রে। তালিকায় রয়েছে গুগল,অ্যামাজন কিংবা ফেসবুকের মতো বড় বড় কোম্পানিগুলোও।
আরও পড়ুন: দলীয় হুইপ অমান্য! লোকসভার ওয়াকফ বিতর্কে ‘অ্যাবসেন্ট’ তৃণমূলের ৩ সাংসদ, শাস্তি নিয়ে জল্পনা
ইতিহাস বলছে, বেসরকারি সংস্থায় সবথেকে বড় ছাঁটাই হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। বিশ্বের অন্যতম বড় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা আইবিএম (IBM) সেবার একসাথে মোট ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল। বেসরকারি সংস্থায় সম্প্রতি কগনিজ্যান্ট ৩৫০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিল। গতবছর অ্যামাজন ১৪ হাজার ম্যানেজার পোস্টের কর্মী ছাঁটাই করেছিল। গুগলও ২০২৩ সালে একধাক্কায় ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে। গতবছরও ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা জানানো হয়েছিল। ইনটেল সংস্থাও ২০২৪ সালে মোট ১৫,০০০ জন কর্মী ছাঁটাই করে দিয়েছিল। কিছুদিন আগে ইনফোসিস ৪০ জন ট্রেনিকে ছাড়িয়ে দিয়েছে।
গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা টেসলায় ২৬৮৮ জন কর্মী ছাঁটাই করে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল করোনার পর। ২০২১ সালে টুইটার কেনার পরই রাতারাতি ৬০০০ কর্মী ছাঁটাই করেছিলেন ইলন মাস্ক।