নীরব থেকেই “মহাবিপদ” কাটিয়ে উঠল ভারত! গর্জে উঠে চরম সঙ্কটে চিন, বড় পদক্ষেপ নিলেন ট্রাম্প

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিনের আগ্রাসী মনোভাব আমেরিকা মোটেও পছন্দ করে না। এই কারণে সমগ্র বিশ্বে কেবল ড্রাগনই পরাজিত হয়েছে। এদিকে, গত বুধবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক আশ্চর্যজনক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি ভারত (India) সহ বেশিরভাগ দেশের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক স্থগিত করেছেন। কিন্তু, তিনি চিনকে রেহাই দেননি। ট্রাম্প চিনের ওপর ১২৫ শতাংশ কর বৃদ্ধি করেছেন।

নীরব থেকেই লাভবান ভারত (India):

শুধু তাই নয়, ট্রাম্প দাবি করেছেন যে বিশ্ব বাজারের প্রতি চিনের অসম্মানের কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানিয়ে রাখি যে, এর আগে, চিন আমেরিকান পণ্যের উপর ৮৪ শতাংশ কর আরোপের ঘোষণা করে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল। এর ফলে চিন ও আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। আমেরিকার এত উচ্চ শুল্কের ফলে চিনা পণ্য মার্কিন বাজারে কার্যত প্রতিযোগিতার বাইরে চলে যাবে। এর ফলে চিনের রফতানিতে প্রত্যক্ষভাবে বিরাট পতন ঘটবে। এমতাবস্থায়, অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারও প্রভাবিত হবে। বৃদ্ধি পেতে পারে বেকারত্বও। বিপরীতে, ভারত “নীরব” থেকেই এই “মহাবিপর্যয়” এড়াতে পেরেছে। আসলে, ভারত (India) পুরো বিষয়টিতে একটি সংযত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিল। এমতাবস্থায়, সংঘাতের পরিবর্তে আলোচনার পথকেই বেছে নেয় ভারত। আর তাতেই মিলেছে লাভ।

মূলত, শুল্কের এই স্থগিত হওয়ার আগে, ভারত (India) এবং চিন উভয়ের নামই সেই দেশগুলির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যাদের ওপর আমেরিকা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেছিল। কিন্তু, পুরো বিষয়টি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভারত ও চিনের অবস্থানের মধ্যে বিশাল পার্থক্য ছিল। মার্কিন শুল্কের জবাবে, চিনও রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেছে। এই সিদ্ধান্ত বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও উস্কে দিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এই যুদ্ধ সামগ্রিকভাবে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ব্যবস্থাকেও অস্থিতিশীল করে তুলেছিল। এই বাণিজ্য যুদ্ধে চিন খারাপভাবে জড়িয়ে পড়ে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ক্ষেত্র থেকে তাদের মনোযোগও সরে যায়।

India escaped danger by remaining silent.

উচ্চ শুল্ক চিনকে প্রতিযোগিতার বাইরে রাখবে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১২৫ শতাংশ শুল্ক চিনের জন্য নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হবে। এর প্রভাব কেবল চিনের ওপরেই পড়বে না, বরং, বিশ্ব অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পরিলক্ষিত হবে। এত বেশি শুল্ক আরোপের ফলে চিনা পণ্য মার্কিন বাজারে কার্যত প্রতিযোগিতার বাইরে চলে যাবে। যার ফলে প্রভাবিত হবে চিনের রফতানি। এটি অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারকেও প্রভাবিত করবে। এমনিতেই চিনের অর্থনীতি মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে চিনে বেকারত্বও বাড়তে পারে। চিন একটি এক্সপোর্ট-ওরিয়েন্টেড দেশ। এমন পরিস্থিতিতে তাকে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।

আরও পড়ুন: IPL চলাকালীন টিম ইন্ডিয়ার প্লেয়ারদের সাথে সাক্ষাৎ দুবাইয়ের প্রিন্সের! হিটম্যান দিলেন “স্পেশাল গিফট”

এছাড়াও, চিন বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এমতাবস্থায়, চিনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব বাণিজ্যে বড় ধরণের ব্যাঘাত ঘটবে। এর ফলে অন্যান্য অনেক দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চিনা পণ্যের বিকল্পগুলিও ব্যয়বহুল হতে পারে। এর ফলে আমদানিকারী দেশগুলিতেওমুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেতে পারে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ধরণের পদক্ষেপ চিন এবং শুল্ক আরোপকারী আমেরিকার মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে। যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও জটিল হতে পারে।

আরও পড়ুন: রেপো রেট কমতেই গ্রাহকদের খুলল কপাল! বড়সড় সুখবর শোনাল PNB সহ এই ৪ টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক

ভারত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে আত্মরক্ষা করেছে: অন্যদিকে, ভারতের (India) ভারসাম্যপূর্ণ এবং আলোচনা ভিত্তিক কৌশল ভারতকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা গিয়ে ট্রাম্পের সামনে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। এই বৈঠকের পর আমেরিকার সাথে আলোচনা বজায় রাখা হয়। ট্রাম্পের নীতি বোঝার প্রচেষ্টা ভারতকে সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে এবং নতুন সুযোগ অন্বেষণেও সাহায্য করেছে। আসলে, এখন আমেরিকার ৯০ দিনের শুল্ক “বিরতির” সময় ভারত আমেরিকার সাথে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। অর্থাৎ, ভারত তাড়াহুড়ো তাড়াহুড়ো করে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তারা কোনও দলাদলিতেও জড়িত হননি। এটি ভারতের (India) জন্য একটি বড় কূটনৈতিক জয় হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X