SSC কাণ্ডে বড় খবর! OMR-এর তথ্য নষ্ট, অযোগ্যদের নিয়োগ করেন কারা? CBI চার্জশিটে ‘চারমূর্তি’র নাম

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যোগ্যদের মধ্যেই ছিলেন একাধিক অযোগ্য, বাছাই করা সম্ভব হয়নি। সেই কারণে ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। গত সপ্তাহে এই রায় দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। যার জেরে একধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৫২ জন। এই আবহে সামনে আসছে, এসএসসি (School Service Commission) নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের ‘চারমূর্তি’র নাম। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সিবিআইয়ের চার্জশিটে উঠে এসেছে সেই চারজনের কীর্তি।

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের (SSC Recruitment Scam) ‘চারমূর্তি’ কারা?

২০২২ সাল থেকে এই বিষয়ক তদন্ত করছে সিবিআই। আদালতে একাধিক চার্জশিট জমা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে স্কুল সার্ভিস কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উচ্চপদস্থ কর্তা সহ বহু ‘প্রভাবশালী’র। এর মধ্যে এসএসসির তিনজন উচ্চপদস্থ কর্তা ও পর্ষদের একজন কর্তাই এই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের ‘চারমূর্তি’।

নিয়োগ দুর্নীতির (SSC Recruitment Scam) এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে এই চারজনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ওএমআরের তথ্য নষ্ট থেকে, নম্বরে কারচুপি, অযোগ্যদের নিয়োগ, ‘চারমূর্তি’র বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে। এই চারজন হলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের একদা পরামর্শদাতা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক সাহা, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।

আরও পড়ুনঃ সরকারি কর্মীদের পোয়া বারো! এবার স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও মিলতে পারে বড় সুবিধা

নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সম্বন্ধিত চার্জশিটে (CBI) সিবিআই জানিয়েছে, এই দুর্নীতির নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন শান্তিপ্রসাদ। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে তিনি গ্রেফতার হন। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযোগ্যদের জন্য ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি করা, অযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ ও তাঁদের থেকে টাকা তুলতে ‘মিডলম্যান’ নিয়োগ, ওএমআর শিটের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নষ্ট সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে এসএসসির একদা পরামর্শদাতার বিরুদ্ধে।

শান্তিপ্রসাদের মতো এই দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ‘ভাগিদার’ অশোক সাহাও (Ashok Saha)। এসএসসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান উত্তরপত্র সংক্রান্ত বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নষ্টের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছিলেন। এছাড়া ১৮৩টি জাল সুপারিশপত্র ও নিয়োগপত্রে অনুমতি প্রদান, চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো চারজন প্রার্থীকে অবৈধ নিয়োগের ক্ষেত্রে শান্তিপ্রসাদদের সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ।

There will be a revolution school teacher said after SSC recruitment scam verdict

চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট তথা উত্তরপত্রের তথ্য নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে এসএসসির আরেক প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশের (Subiresh Bhattacharya) বিরুদ্ধেও। তাঁর নির্দেশে কমিশনের সার্ভারে ওএমআরের নম্বর বদলানোর কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ। এছাড়াও অভিযোগ, ওএমআর শিট মূল্যায়নকারী সংস্থা নাইসার কাছ থেকে নম্বর আসার পর অযোগ্যদের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার মৌখিক নির্দেশ ও নম্বর পরিবর্তনের জন্য ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের প্রভাবিত করতেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য।

এসএসসির এই তিন উচ্চপদস্থ কর্তার পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সাবেক সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় (Kalyanmoy Ganguly)। সিবিআইয়ের দাবি, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দিতে শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি। ১৮৩ জন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীকে জাল নিয়োগপত্র দেন কল্যাণময়। এছাড়া অযোগ্যদের নামে যে সুপারিশপত্রগুলি দেওয়া হয়েছিল, মাস তিনেকের মাথায় তার ভিত্তিতে সবার কাছে নিয়োগপত্র পৌঁছে দিয়েছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি।

আরও পড়ুনঃ প্রাইমারি ছেড়ে হাই স্কুলে, চাকরি হারিয়ে ফের পুরনো জায়গায় ফিরতে হুড়োহুড়ি শিক্ষকদের

এছাড়াও এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের (SSC Recruitment Scam) চার্জশিটে আরও একাধিক ব্যক্তির নাম তুলে ধরেছে সিবিআই। এর মধ্যে কেউ স্কুল সার্ভিস কমিশনে কাজ করতেন, কেউ আবার দুর্নীতিকাণ্ডের ‘মিডলম্যান’ ছিলেন।

২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) প্যানেলে যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব না হওয়ায় সকলের চাকরি বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। উত্তরপত্র নষ্ট করে দেওয়ায় কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য, সেটা চিহ্নিত করা যায়নি। সেই কারণে বাতিল হয়েছে সকলের চাকরি। অনেকেরই দাবি, যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না হওয়ার ফলে সমগ্র প্যানেল বাতিল হওয়া সংক্রান্ত যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছেন এই ‘চারমূর্তি’।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X