বাংলাহান্ট ডেস্ক : শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। সরকারের পালাবদল হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে। ভারত বারংবার নরমে গরমে বার্তা দিলেও তা কানে তোলেনি তদারকি সরকার। এবার আসরে নামলেন খোদ বাংলাদেশের (Bangladesh) সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান। রবিবার ঢাকায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে সম্প্রীতি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে সেনাবাহিনীর। মৌলবাদীদেরই সম্ভবত তিনি বার্তা দিয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বাংলাদেশে (Bangladesh) সম্প্রীতির বার্তা সেনাপ্রধানের
এদিন ওয়াকার উজ জামান বলেন, ‘আমরা হিংসা বিদ্বেষ চাই না। এ দেশ সকলের। সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাই একসঙ্গে বসবাস করতে চাই’। তিনি আরো বলেন, নিজের জীবনের একটা বড় অংশ তিনি কাটিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে। সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সেনাবাহিনী সবরকম ভাবে প্রস্তুত। এদিনের অনুষ্ঠান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে তুলে ধরে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় সব ধর্ম, বর্ণ, সব সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে চাই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করছি। ভিন্ন ভিন্ন মত থাকলেও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব থাকতে হবে’।
বাংলাদেশ ভাগের হুঁশিয়ারি: এর আগে চট্টগ্রামে চাকমা সহ অন্যান্য উপজাতিদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। আদিবাসী বৌদ্ধ তথা চট্টগ্রাম শহরে হিন্দুদের উপরেও অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। এই বিষয়টি উল্লেখ করেই সম্প্রতি বাংলাদেশ (Bangladesh) ভাগ করার কথা হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন ভারতের রাজনীতিবিদ প্রদ্যোত মাণিক্য দেববর্মা। তিনি দাবি করেছিলেন, বৌদ্ধ উপজাতিরা ১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতের সঙ্গে আসতে চেয়েছিল। সে সময় চট্টগ্রাম বন্দর ভারতের হাতছাড়া করা উচিত হয়নি।
আরো পড়ুন : বাসের মাথায় প্যালেস্টাইনের পতাকা! বাস্তবের চিত্র তুলে ‘বেঙ্গল চ্যাপ্টার’এর ঘোষণা অগ্নিহোত্রীর
মৌলবাদীদের বার্তা জেনারেলের: এরপরেই বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ইউনূসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রদ্যোত বলেছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কিন্তু ভারতের ত্রিপুরা থেকে খুব একটা দূরে নয়। ভারতকে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়েই ‘রাস্তা করে নেওয়া’র কথা বলেছিলেন তিনি। আর এই আবহেই এবার পরোক্ষে বাংলাদেশের (Bangladesh) মধ্যে মৌলবাদকে সামলে থাকার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন সেনাপ্রধান।
আরো পড়ুন : কম খরচে ফার্স্ট ক্লাস চিকিৎসা পরিষেবা, পুজোর আগেই শহরে খুলে যাচ্ছে ‘বাজেট হাসপাতাল’
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই চিন সফরে গিয়ে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, ওই সাতটি রাজ্য স্থলভাগ এবং পাহাড়ে ঘেরা। সমুদ্র পথে যোগাযোগ করার উপায় নেই তাদের। এদিকে বাংলাদেশ হল সমুদ্র পথের রাজা। তাই ওই এলাকায় চিনা অর্থনীতি বিস্তার ঘটাতেই পারে। তারপরেই পালটা হুঁশিয়ারি দেন প্রদ্যোত। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উপরে বৌদ্ধদের উপরে অত্যাচারের বিষয়টি যে মায়ানমারের আরাকান আর্মি এবং চিন বিদ্রোহীরাও ভালো চোখ দেখে না তাও উল্লেখ করতে হয়। তাই এবার বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জিততেই জেনারেল ওয়াকার এমন মন্তব্য করেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।