বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতের আইন শিক্ষায় জুড়ে যাক রামায়ণ, মহাভারত, গীতা! এবার এমন ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি। সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের ৭৫ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে ভোপালের ন্যাশানাল ল’ ইনস্টিটিউট ইউনিভার্সিটিতে একটি আইন সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন জাস্টিস পঙ্কজ মিঠাল (Justice Pankaj Mithal)। সেখানেই এই মন্তব্য করেন তিনি।
আর কী কী বললেন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি?
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বলেন, ‘ভারতবর্ষের প্রাচীন আইনি দর্শন- রামায়ণ, মহাভারত, বেদ, অর্থশাস্ত্র, মনুস্মৃতি ইত্যাদি আনুষ্ঠানিকভাবে আইন শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার সময় এসেছে’। এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যেন বিচার এবং ন্যায়বিচারের ধারণা শুধু পশ্চিমী চিন্তাধারার ওপর ভিত্তি করে না শেখে, বরং এদেশের প্রাচীন আইনি যুক্তি এবং দর্শন কী সেটা বুঝে উঠতে পারে, সেই ব্যবস্থাই তৈরি করতে হবে’।
এরপরেই এদেশের আইন শিক্ষায় একটি নতুন বিষয় শুরু করার প্রস্তাব দেন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি। জাস্টিস মিঠাল বলেন, ‘ভারতীয় আইনশাস্ত্রের ভিত্তি’ অথবা ‘ধর্ম ও ভারতীয় আইনি চিন্তাভাবনা’ নামের একটি নতুন বিষয় শুরু করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র ইতিহাস অথবা সংস্কৃতি নয়, বরং আধুনিক সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রাচীন মূল্যবোধের সংযোগ ঘটাবে।
আরও পড়ুনঃ ছাব্বিশের ভোটের আগেই বড় খবর! নির্বাচন পিছোতে চেয়ে কমিশনকে চিঠি BJP-র
বিচারপতি মিঠালের মতে, ভারতীয় বিচারব্যবস্থার প্রতীক হিসেবে শুধুমাত্র সংবিধান নয়, বেদ, পুরাণ, গীতা জায়গা গেলে আইনব্যবস্থা আরও মৌলিক ও মানবিক স্তরে পৌঁছবে। বিচারব্যবস্থার ভারতীয়করণের প্রক্রিয়া নিয়েও এদিন বেশ কিছু মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বলেন, এদেশের ন্যায়বিচারের ইতিহাস ১৯৫০ সাল থেকে শুরু হয়নি। বরং এর ইতিহাস অনেক পুরনো। শীর্ষ আদালতের নীতিবাক্য ‘যতো ধর্মসো ততো জয়’এর কথা টেনে তিনি বলেন, ‘ধর্ম এখানে শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক নয়, বরং এটি শাসন, ন্যায়, নৈতিকতা এবং সামাজিক দায়িত্বের প্রতীক। শীর্ষ আদালতের কাজ হল, সেই ধর্মের পথকে আইনের ক্ষেত্রে নৈতিক জাগরণ এবং ন্যায়ের হাতিয়ার করে তোলা’।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটা যদি মেনে নেওয়া হয়, তাহলে তা ভারতীয় আইন শিক্ষার একটি ঐতিহাসিক মোড় হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘ভারতীয় আইনশাস্ত্রের পুনরুজ্জীবন’ হিসেবে দেখছেন। বহু বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ বিষয়টিকে এই হিসেবেই দেখছেন।