বাংলা হান্ট ডেস্ক: আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় (Digha) উদ্বোধন হবে নবনির্মীয়মান জগন্নাথ মন্দিরের। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই মন্দিরের উদ্বোধন করবেন। তবে তার আগেই গত রবিবার দিঘাতে এমন একটি ঘটনা ঘটে, যেটি রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় সর্বত্র। মূলত, দিঘার মাইতি ঘাটে আচমকাই ভেসে আসে স্বয়ং জগন্নাথ দেবের একটি কাঠের মূর্তি। এমতাবস্থায়, মন্দির উদ্বোধনের আগে এহেন ঘটনাকে প্রত্যেকেই “অলৌকিক” বলে বিবেচিত করেছিলেন। যদিও, এই ঘটনার আসল সত্যতা এবার সামনে এসেছে।
কীভাবে দিঘার (Digha) সমুদ্রে ভেসে এসেছিল জগন্নাথ দেবের মূর্তি?
মূলত, জগন্নাথ দেবের ওই মূর্তি এতদিন কোথায় পূজিত হতেন এবং কার বাড়িতে ছিলেন সেই তথ্যই এবার প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, দিঘা (Digha) থানার খালাল গোবরা গ্রামের বাসিন্দা কল্পনা জানার বাড়ির মন্দিরেই বিগত এক বছর ধরে পুজো পাচ্ছিলেন জগন্নাথ দেবের ওই বিগ্রহ। ইতিমধ্যেই এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন কল্পনা নিজেই।
গতকাল বিকেলে দীঘার মাইতিঘাটের কাছে উদ্ধার হওয়া জগন্নাথ দেবের মূর্তির আসল রহস্য……
এই ঠাকুরটি এক বছর ধরে পূজিত হচ্ছিলেন দীঘা থানার খালাল গোবরা গ্রামের বাসিন্দা, কল্পনা জানার বাড়িতে। সেই ঠাকুরের হাত এবং মাথায় কিছুটা ক্ষত হয়ে যাওয়ায় তারা পন্ডিতের কাছে গিয়ে জানতে পারেন… pic.twitter.com/OyoUgcXT61
— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) April 21, 2025
তিনি বলেন, “আমাদের বাড়ির পাশে একটা বস্তি রয়েছে। ১ বছর আগে সেখানকার কয়েকটি ছেলে সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে ঠাকুরের ওই মূর্তি নিয়ে এসেছিল। তারপরে ঠাকুরের ওই বিগ্রহ আমাদের মন্দিরে বসানো হয়। তারপর ব্রাহ্মণ দিয়েই ঠাকুরের পুজো করা হয়। দুর্গাপুজোর সময়ে মূর্তিটিকে রং করাও হয়। মাস দু’য়েক আগে মূর্তিটির মাথায় এবং হাতে ফাটল দেখা দেয়। তাই, এই ‘খুঁত’ হওয়াতে আমরা আচার্যের কাছ থেকে পরামর্শের জন্য যাই। তিনি বলেন, দুর্গা মন্দিরে জগন্নাথ দেবকে রাখা যায় না। পাশাপাশি, ঠাকুরের বিগ্রহে ‘খুঁত’ থাকায় তিনি বলেন যারা এই মূর্তি নিয়ে এসেছিল তাদেরকেই বলে সমুদ্রে মূর্তিটিকে ভাসিয়ে দেওয়া হোক।”
আরও পড়ুন: সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের অন্দরে প্রবেশ আরাকান আর্মির, বড়সড় বিপদের সম্মুখীন ইউনূস
সেই পরামর্শ অনুযায়ী, গতকাল দুপুর ২ টো নাগাদ মূর্তিটি ফের সমুদ্রে ভাসিয়ে দিয়ে আসা হয়। ওই মূর্তিটি পরবর্তীতে আবার ভেসে ভেসে জগন্নাথ ঘাটে পৌঁছে যায়। এমতাবস্থায়, কল্পনা জানিয়েছেন “আমরা মন্দিরে রাখতে পারব না বলেই আচার্যের পরামর্শ অনুযায়ী ঠাকুরের ওই মূর্তি সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।” ওই মূর্তিটিকেই পরবর্তীকালে সমুদ্র থেকে তুলে আনা হয় এবং এই ঘটনাটি উঠে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
আরও পড়ুন: দাম বৃদ্ধির পর ফের ঝটকা! আর বাড়িতে ডেলিভারি হবে না LPG সিলিন্ডার? নতুন চিন্তায় গ্রাহকেরা
এদিকে, রবিবার রাতেই ওই মূর্তিটি অত্যন্ত ভক্তিভরে ভোগীব্রহ্মপুর গ্রামের নিজের বাড়িতে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দা অবনী সামন্ত। জগন্নাথ দেবের পুজো করে প্রসাদও বিলি করেন তিনি। অবনীর বাড়িতে জগন্নাথ দেবের দর্শন এর জন্য ভিড় জমান স্থানীয়রা। এই ঘটনার প্রসঙ্গে কল্পনা জানিয়েছেন, “তাঁরা (অবনী সামন্ত) যদি তাঁদের বাড়িতে জগন্নাথ দেবের ওই মূর্তি রাখতে চান তাঁরা অবশ্যই রাখতে পারেন। এতে আমদের কোনও আপত্তি নেই।”