টুরিস্ট স্পটগুলিতে নেই নিরাপত্তা! ঘটনার পর কী পরিস্থিতি কাশ্মীরে? ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শোনালেন বাঙালি পর্যটক

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর! মঙ্গলবারের ঘটনার পরে এটাই যেন বাস্তব হয়ে উঠেছে। নতুন করে অশান্ত কাশ্মীরে (Kashmir Attack) নারকীয় হত্যাকান্ডের বলি হতে হয়েছে ঘুরতে যাওয়া নিরীহ পর্যটকদের। পহেলগাঁওয়ের বৈশরণ উপত্যকায় আচমকাই সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত হয়ে আসে কয়েকজন জঙ্গি। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করে ২৬ জনকে। আহত আরও ২০। হাড়হিম করা ঘটনায় আতঙ্কের ছায়া গ্রাস করেছে উপত্যকাকে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে গিয়ে আটকে পড়েন বাঙালি পর্যটক সংবেদী সিংহ রায়। মঙ্গলবার ঠিক কী ঘটে ওই অভিশপ্ত মুহূর্তে? বাংলাহান্টকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন তিনি।

ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন কাশ্মীরে (Kashmir Attack)?

চাকদার বাসিন্দা সংবেদী সিংহ রায়। স্বামী এবং দেড় বছরের সন্তানকে নিয়ে গত ১৮ ই এপ্রিল কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। বাংলাহান্টকে সংবেদী জানান, ঘটনার দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার তাঁরাও যাচ্ছিলেন পহেলগাঁও (Kashmir Attack)। মধ্যাহ্নভোজ সেরেই দুপুর তিনটে-সাড়ে তিনটে নাগাদ রওনা হয়েছিলেন পহেলগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে। তাঁরা যখন মাত্র ৩০ কিমি দূরে পহেলগাঁও থেকে, তখনই বাড়ি থেকে আসে ফোন। খবরে সবটা দেখে তাঁদের আর এগোতে বারণ করেন বাড়ির লোকেরা।

Tourist experience of kashmir attack

খবর ছিল না সিআরপিএফের কাছে: সংবেদী জানান, সে সময় সিআরপিএফ জওয়ানদের পরিস্থিতির কথা জিজ্ঞাসা করায় তাঁরা কিন্তু কোনো বাধা দেননি। বরং বলেছিলেন, কোনো সমস্যা নেই, এগিয়ে যেতে। তবে তাঁদের গাড়ির চালক কোনো সূত্রে খবর পেয়ে বলেন যে সামনে গাড়িতে পাথর ছোড়া হচ্ছে। আর এগোনো যাবে না। তখনও ওখানে হত্যালীলার খবর পৌঁছায়নি। গাড়ির চালকের কথাতেই আর পহেলগাঁও (Kashmir Attack) না গিয়ে শ্রীনগর ফেরেন সংবেদীরা। আসলে কী ঘটেছে, সেই খবরটা তাঁরা পান সেদিন সন্ধ্যায়। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এত বড় একটা ঘটনার খবর কি সিআরপিএফ জওয়ানদের কাছে ছিল না?

আরো পড়ুন : কাশ্মীর হামলার জের, রাতারাতি বিরাট সিদ্ধান্ত মুসলিম বোর্ডের

নিরাপত্তা কেমন রয়েছে কাশ্মীরে: এই পরিপ্রেক্ষিতেই বড় অভিযোগ এনেছেন সংবেদী। তিনি জানান, ঘটনার আগের দিন তাঁরা ছিলেন গুলমার্গে (Kashmir Attack)। সারা রাস্তায় জওয়ান মোতায়েন থাকলেও আসল যে টুরিস্ট স্পটগুলি সেখানেই রয়েছে নিরাপত্তার অভাব। তিনি বলেন, “ঘটনার আগের দিনও টুরিস্ট স্পটগুলিতে তেমন জওয়ানদের দেখা যায়নি। রাস্তায় ১০০-২০০ মিটার অন্তর অন্তর সিআরপিএফ থাকলেও পর্যটক স্থলগুলিতে কারোর সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটে গেলেও কিছু করার থাকবে না”।

আরো পড়ুন : তিনিই আন্দোলনের মুখ, অথচ তাঁর নামই বাদ! SSC বিতর্কে মুখ খুললেন চিন্ময়

যদিও তিনি জানান, কাশ্মীরের স্থানীয় মানুষদের থেকে সহযোগিতাই পেয়েছেন তাঁরা। ঘটনার আগে বা পরে কেউ কোনো খারাপ ব্যবহার করেননি। মঙ্গলবারের ঘটনার পর বুধবার স্থানীয়রা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বনধ ডেকেছিলেন। ডাল লেকেও শিকারা নিয়ে হয়েছে প্রতিবাদ। তবে বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হয়েছে। যদিও আতঙ্ক কাটেনি এখনও, পরিবেশ থমথমে। নিরাপত্তা বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। আজই কলকাতায় ফেরার ফ্লাইট রয়েছে বলে জানান সংবেদী।

Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

X