বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কয়েকমাসে একাধিক ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের (Police) ভূমিকা। বহু ক্ষেত্রে ভর্ৎসিতও হতে হয়েছে তাঁদের। তবে এবার ৭ জন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। অভিযোগ প্রমাণিত হতেই কড়া নির্দেশ দিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক (Justice Debangshu Basak) ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
কোন মামলায় এই নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ২০১৯ সালের। হাওড়া আদালতে বাইক রাখা ঘিরে অশান্তির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ। সেই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে আদালত। এদিন সেই মামলার শুনানিতেই বড় নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
২০১৯ সালের সেই ঘটনা প্রসঙ্গে আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘বাইক রাখা এবং অটো থেকে আইনজীবীর নামা ঘিরে হাওড়া পুরসভার কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে একটি বচসা হয়। সেই বচসা এরপর হাতাহাতিতে গড়ায়। তখন হাওড়া আদালতের আইনজীবী ও হাওড়া পুরসভার আইনজীবীদের মধ্যে ঝামেলা হয়। সেটা মিটেও যাচ্ছিল। তবে একজন রাজনীতিক এতে মধ্যস্থতা করেন’।
আরও পড়ুনঃ মৃত্যুর দু’সপ্তাহ পর বেরোল মাধ্যমিকের রেজাল্ট! জেলায় প্রথম হওয়া ছাত্রীর পরিবারে শুধুই হাহাকার
আইনজীবী দাবি করেন, হাওড়া আদালতের (Howrah Court) উকিলদের পুরসভায় গিয়ে মেটানোর কথা বলা হয়। হাওড়া আদালতের উকিলরা সেকথা মানতে চাননি। তাঁরা পাল্টা দাবি করে, পুরসভার উকিলদের এসে সবটা মেটাতে হবে। একথা শুনে ওই রাজনীতিক নাকি বলেন, তোমাদের যা ইচ্ছা করো। আমিও দেখছি কী করা যায়! এরপরেই শুরু হয় ‘তাণ্ডব’।
আইনজীবী বলেন, ‘হাওড়া আদালতের সিনিয়র আইনজীবীদের মারধর, চেম্বার তছনছ করা হয়। মহিলা আইনজীবীকে পুরসভায় ঢুকিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেওয়া হয়। এরপরেই এই নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয়। সেই সময়কার প্রধান বিচারপতি এই মামলা গ্রহণ করেছিলেন। এরপর বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্তকে কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেন বিচারপতি সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। ৬ মাসের মধ্যে উনি জানান, ওই পুলিশ আধিকারিকরা ভীষণ অন্যায় করেছেন। হাওড়া আদালতের ভেতর কাঁদানে গ্যাস চালানো হয়েছিল। জেলা জজের ঘরে তার সেল পড়ে ছিল। এরপর কোভিডের কারণে এই মামলা স্থগিত ছিল। বেঞ্চ বদল হয়ে আজ শুনানি হল’।
এই মামলার শুনানিতেই হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানায়, ৭ জন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনজীবীদের লাঠিপেটার করার অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে। ওই ৭ পুলিশ আধিকারিকের নাম ভাবনা গুপ্ত, ভি এস আর অনন্ত নাগ, বিশাল গর্গ, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোলাম সারোয়ার, রাজর্ষি দত্ত ও বিপিন তামাং। প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে কারণ ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ২৫ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি।