দিঘার মন্দিরে “জগন্নাথ ধাম” শব্দের ব্যবহারে প্রতিবাদে সরব পুরীর ভক্তরা! মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হল চিঠি

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত ৩০ এপ্রিল দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিকে, দিঘার এই মন্দিরকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার “জগন্নাথ ধাম” হিসেবে বিবেচিত করেছে। আর এই ঘটনাতেই ক্ষুব্দ হয়েছেন পুরীর মন্দিরের একাধিক ভক্ত। শুধু তাই নয়, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের পরিচালন কমিটির অন্তত দু’জন প্রাক্তন সদস্য এই স্বঘোষিত উপাধি বা লেবেল প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন।

দিঘার মন্দিরের উদ্বোধনের করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee):

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ব্যাখা চাইলেন সুদর্শন পট্টনায়েক: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ইতিমধ্যেই একাধিক হিন্দু পুরোহিত থেকে শুরু করে সেবায়েত, গবেষক এবং পন্ডিতরা দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের নামকরণে “ধাম” শব্দের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়েছেন। প্রখ্যাত বালুশিল্পী তথা পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত সুদর্শন পট্টনায়েক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে এই বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়েছেন। এছাড়াও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি জগন্নাথ ভক্তের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত বুধবার দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ওই মন্দিরকে “ধাম” হিসেবে উল্লেখ করেন। যদিও, বেশিরভাগ সমালোচক দিঘায় মন্দির প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও তার সাথে “ধাম” শব্দটি যুক্ত করার তীব্র বিরোধিতা করেন। ইতিমধ্যেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝিকে লেখা চিঠিতে সুদর্শন পট্টনায়েক জানিয়েছেন, “এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে প্রভু জগন্নাথের কোটি কোটি ভক্তের ধর্মীয় অনুভূতিতে গভীরভাবে আঘাত করেছে। আমাদের পবিত্র শাস্ত্র অনুসারে একটিমাত্র “জগন্নাথ ধাম” বিদ্যমান। যেটি অবস্থিত রয়েছে পুরীতে। এমতাবস্থায়, এই নামের সাথে অন্য মন্দিরকে যুক্ত করা হলে তা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে এবং দীর্ঘদিনের আধ্যাত্মিক ও হিন্দু সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে সংঘর্ষ হতে পারে।” এমতাবস্থায় তিনি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন: মোহনবাগানের শুভাশিসই AIFF-র বর্ষসেরা ফুটবলার! কে হলেন সেরা গোলরক্ষক? জানুন বিশদে

এদিকে, পট্টনায়েক আরও বলেন, দিঘার মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পুরীর মন্দিরের বেশ কয়েকজন সেবায়েত দাবি করেন যে, ভগবান জগন্নাথের পাথরের মূর্তিতে “ব্রহ্মা” স্থাপন করা হয়েছে। “এই দাবিটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। কারণ মহাপ্রভু জগন্নাথের মূর্তিতে “ব্রহ্মার” ধারণাটি পুরীর মূল মন্দিরের একটি পবিত্র এবং অনন্য বৈশিষ্ট্য। যা বহু শতাব্দী ধরে ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় গোপনীয়তার মধ্যে নিহিত রয়েছে।”

আরও পড়ুন: মুসলিমদের বিরুদ্ধে খুলেছিলেন মুখ! ভারতে ইউটিউব চ্যানেল “ব্লকড” হতেই গর্জে উঠলেন বাংলাদেশি ব্লগার

এমতাবস্থায় তিনি, ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দনকে তাঁর চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের অনুরোধ করেছেন। বিশেষ করে “ব্রহ্মা” এবং “জগন্নাথ ধাম” শব্দগুলি ব্যবহারের বিষয়েই তিনি সতর্ক করেছেন। এদিকে, সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময়ে সুদর্শন পট্টনায়েক বলেন, “দিঘার মন্দিরটিকে ‘ধাম’ হিসেবে তুলে ধরার জন্য আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) কোটি কোটি জগন্নাথ ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করছি।”

দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও:

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X