বাংলাহান্ট ডেস্ক : উদ্বোধন হতে না হতেই বিতর্ক শুরু দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) নিয়ে। অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ দিনে মন্দির উদ্বোধন এবং প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে জগন্নাথদেবের বিগ্রহে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন ওই কর্মসূচিতে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত রাজেশ দয়িতাপতির নেতৃত্বে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয় বিগ্রহে। কিন্তু দিন কয়েক যেতে না যেতেই বড় বিতর্কে জড়াল দিঘার নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) নাম। কোন কাঠ দিয়ে দিঘার মন্দিরের জগন্নাথদেবের বিগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং মন্দির উদ্বোধনের কর্মসূচিতে পুরীর সেবায়েতদের মধ্যে কারা উপস্থিত ছিলেন তা নিয়ে এবার কড়া তদন্ত শুরু করল ওড়িশা সরকার।
দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধন নিয়ে তদন্ত ওড়িশা সরকারের
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, দিঘার মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) দ্বারোদ্ঘাটন এবং বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠার কর্মসূচি নিয়ে এবার তদন্তে নামতে চলেছে ওড়িশার বিজেপি শাসিত সরকার। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন এই বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের জন্য চিঠি মারফত নির্দেশ দিয়েছেন পুরীর জগন্নাথ ধামের প্রধান প্রশাসককে। কিন্তু বিতর্ক ঠিক কী নিয়ে? অভিযোগ উঠেছে, পুরীর মন্দিরে জগন্নাথদেবের ‘নবকলেবর’ থেকে উদ্বৃত্ত কাঠ দিয়েই নাকি তৈরি করা হয়েছে দিঘার মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) বিগ্রহ। সম্প্রতি এমনি অভিযোগে তোলপাড় বিভিন্ন মহল। সেই প্রেক্ষিতেই এবার দিঘার মন্দির উদ্বোধনের কর্মসূচি নিয়ে তদন্তে নামছে ওড়িশা সরকার। সেদিন পুরীর মন্দিরের সেবায়েতদের মধ্যে কারা উপস্থিত ছিলেন এবং কোন কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে বিগ্রহ তা জানতেই এবার বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে সে রাজ্যের সরকার।
একগুচ্ছ অভিযোগ দিঘার মন্দির নিয়ে: প্রসঙ্গত, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন নিয়ম মেনেই শুভ সময় ধরে জগন্নাথদেবের বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত রাজেশ দয়িতাপতি উপস্থিত ছিলেন সেদিন। তাঁর নেতৃত্বেই মন্দিরের দরজা বন্ধ করে শুভ সময়ের মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয় জগন্নাথ বিগ্রহে। তারপর বেলা বেড়াল ১২ টা নাগাদ মন্দিরের ভেতরে পাথরের জগন্নাথ বিগ্রহেও প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন ইসকনের সেবায়েতরা।
আরো পড়ুন : যোগী স্টাইলে! এবার বাংলায় চলল বুলডোজার, গুঁড়িয়ে দেওয়া হল এই নেতার কার্যালয়
কী বললেন পুরীর প্রধান সেবায়েত: উল্লেখ্য, প্রতি ১২ বা ১৯ বছর অন্তর পুরীর মন্দিরে নতুন করে তৈরি করা হয় জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রার বিগ্রহ। একেই বলে ‘নবকলেবর’ অনুষ্ঠান। পুরীর মন্দিরের বিগ্রহ তৈরিতে যে নিমকাঠ ব্যবহৃত হয় তা নিয়েই রয়েছে বহুকালের প্রচলিত বিশ্বাস। সেই কাঠ দিয়েই এবার দিঘার মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) বিগ্রহ তৈরির জল্পনায় বিতর্ক উঠেছে তুঙ্গে। উল্লেখ্য, ওড়িশার স্থানীয় কিছু সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, রাজেশ দয়িতাপতি নাকি বাংলা সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, পুরীর মন্দিরে বিগ্রহ তৈরির অবশিষ্ট কাঠ দিয়েই নাকি দিঘার মন্দিরের বিগ্রহ তৈরি হয়েছে। তবে সেকথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন পুরীর মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত।
আরো পড়ুন : ভারতকে ছাড়া চলে না, বাণিজ্য বন্ধ হতে দুর্বিপাকে পাকিস্তান, কী কী আমদানি-রপ্তানি হয় দুই দেশের?
এদিকে দিঘার মন্দিরকে ‘জগন্নাথ ধাম’ নামকরণের বিরুদ্ধেও আপত্তি প্রকাশ করেছে ওড়িশা সরকার। এ বিষয়ে রাজেশ দয়িতাপতি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে তিনি মন্দিরের উদ্বোধনী কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে এবার মন্দির থেকে ‘ধাম’ শব্দটি তিনি সরিয়ে ফেলার জন্য অনুরোধ করেছেন মমতাকে।