বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত এপ্রিল মাসে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন বিজেপির (BJP) প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এক মাস যেতে না যেতেই পরিবারে শোকের ছায়া। মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে দিলীপ-পত্নী রিঙ্কু মজুমদারের (Rinku Majumdar) প্রথম পক্ষের পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত ওরফে প্রীতমের। গতকালই ‘পুত্রশোক’ পাওয়ার কথা বলেছিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ। কিন্তু তারপরেও বুধবার সকালে মর্নিং ওয়াকে দেখা গেল তাঁকে। শোক ও বিতর্কের আবহেও প্রাতঃ ভ্রমণ মিস করেননি তিনি।
বিগত কয়েক বছর ধরেই ইকো পার্কে প্রাতঃ ভ্রমণ করেন দিলীপ (Dilip Ghosh)
যুব বয়স থেকেই আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত দিলীপ ঘোষ। যোগাভ্যাস থেকে লাঠিখেলা, সবেতেই তিনি সিদ্ধহস্ত বলে খবর। ২০১৫ সাল থেকে সক্রিয় রাজনীতির অংশ। শত ব্যস্ততার মধ্যেও পুরনো অভ্যাসে বদল আনেননি এই দাপুটে রাজনীতিক। গত মাসে বিয়ের আবহেও ইকো পার্কে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আজ, প্রীতমের মৃত্যুর পরের দিনও এর অন্যথা হল না।
মন কতখানি শক্ত হলে এটা সম্ভব? দিলীপ কীভাবে নিজের মন এতটা শক্ত রাখতে পারেন? তাঁর ফিটনেসের রহস্যটাই বা কী? এসব নিয়ে মনোবিদদের বক্তব্য তুলে ধরেছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
আরও পড়ুনঃ গরমের মধ্যেই স্বস্তির কালবৈশাখী! টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস! কোন কোন জেলায় তাণ্ডব?
মনোবিদ অংশুমান দাস বলেন, ‘শোকের মধ্যে, হতাশার সময় একা থাকার চেয়ে মানুষের মধ্যে থাকলে, চেনা রুটিনে ফেরার চেষ্টা করলে মন ভালো থাকবে। সকালে যদি শরীরচর্চা করা যায় তাহলে ভালো। কেউ যদি অন্যান্য দিন বাজার করতে যান, তিনি এই দিনগুলিতেও যেতে পারলে ভালো’।
শরীরচর্চা মন ভালো থাকার অন্যতম মন্ত্র, বহুবার একথা শোনা গিয়েছে মনোবিদদের মুখে। মনোবিদ জয়রঞ্জন রাম এদিন বলেন, ‘আমাদের যখন মন ভালো থাকে না, তখন আমরা শরীরচর্চা একেবারেই ছেড়ে দিই। তাতে মনের অবসাদ আরও বৃদ্ধি পায়। মন যখন ভালো থাকে না, তখন বেশি করে শরীরচর্চার চেষ্টা করলে মন ভালো থাকে’।
শরীরচর্চা কেন মন ভালোর রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেটারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন জয়রঞ্জন রাম। তিনি বলেন, ‘শরীরের সঙ্গে মনের যোগ তো রয়েছেই। এর ফলে এন্ডোরফিন নামের একপ্রকার কেমিক্যাল রিলিজ হয়’। এই কেমিক্যাল রক্ত চলাচল ভালো রাখতে, মন উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে বলে জানাচ্ছেন মনোবিদরা।
কেউ চলে যাওয়ার পর যদি ধীরে ধীরে জীবনের মুল স্রোতে ফিরে আসার চেষ্টা করা যায়, তাহলে অনেকটাই ভালো বলছেন অংশুমান দাস। তাঁর কথায়, ‘কেউ চলে গেলে তো আর ফিরে আসবে না। তাই আমি যদি এই সময় জীবনের মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা করি, তাহলে অনেকটাই ভালো থাকা যায়। তবে সেটা না করে যদি হতাশা-দুঃখ-শোকের মধ্যে থাকি, তাহলে আমারও কষ্টে সময় কাটবে। সেই জন্য নিজেকে কিছুর মধ্যে ব্যস্ত রাখা গেলে কঠিন সময়ের মোকাবিলা আরও ভালোভাবে করা যায়’।
উল্লেখ্য, গতকাল আচমকাই দিলীপ (Dilip Ghosh) জায়া রিঙ্কুর ছেলে প্রীতমের মৃত্যুসংবাদ আসে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন রিঙ্কু। প্রীতমের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিজেপি নেতাও। গতকালই সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছিলেন, ‘এই বয়সে পুত্রসুখ পেলাম না, পুত্রশোক পেয়ে গেলাম’।