বাংলাহান্ট ডেস্ক : বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিকাশ ভবন চত্বর উত্তাল হয়েছিল চাকরিহারা শিক্ষক (SSC Scam) এবং শিক্ষাকর্মীদের বিক্ষোভে। সারা দিন বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান আন্দোলন চালানোর পর রাত হতেই কার্যত রণমূর্তি ধারণ করে পুলিশ। এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ শুরু করে বিক্ষোভরণ শিক্ষকদের (SSC Scam) উপরে। তুমুল হুলস্থুলের পরিস্থিতি তৈরি হয় বিকাশ ভবন চত্বরে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে লাঠিচার্জ করার কথা স্বীকার করে নিলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম। যদিও তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, পুলিশের তরফে যথেষ্ট ধৈর্য দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার চাকরিহারাদের (SSC Scam) উপরে লাঠিচার্জের কথা স্বীকার করল পুলিশ
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা নাগাদ বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক (SSC Scam) এবং শিক্ষাকর্মীরা। অনেকে গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিকেলে চাকরিহারাদের তরফে চিন্ময় মণ্ডল, মেহবুব মণ্ডলেরা বলেন, নতুন করে কোনো পরীক্ষায় তাঁরা বসবেন না। আগের চাকরিই ফিরিয়ে দিতে হবে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপও দাবি করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে চাকরিহারাদের (SSC Scam) তরফে জানানো হয়, বিকাশ ভবনের বাইরে ঘেরাও আন্দোলন চলবে যতক্ষণ না মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। তবে বিকাশ ভবনের কর্মীদের খাবার, জল কিছুই ভেতরে নিয়ে যাওয়া থেকে আটকানো হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
অনেকেই গুরুতর আহত হন: এরপর রাত আরেকটু গড়াতেই শুরু হয় পুলিশের ‘অ্যাকশন’। রাত আটটা নাগাদ বিক্ষোভরত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। হঠাৎ করেই বাড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের সংখ্যা। পুলিশ বলপ্রয়োগ করতেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাঁধে তাঁদের খণ্ডযুদ্ধ। অভিযোগ, পুলিশের লাঠি, হেলমেটের ঘায়ে অনেকেই গুরুতর জখম হয়েছেন। শুক্রবার বৈঠকে এই লাঠিচার্জের কথা স্বীকার করে নিয়ে জানানো হয়, বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ।
সাংবাদিক বৈঠক পুলিশের তরফে: এদিন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, পুলিশ প্রথম থেকেই সংযত ছিল। দীর্ঘ সাত ঘন্টা আন্দোলনকারীদের (SSC Scam) পুলিশ কিছু বলেনি। কারণ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার সকলের রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হলে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এরপরেই লাঠিচার্জের কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা ১০ দিন ধরে পালা করে বিকাশ ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন। পুলিশ প্রশাসন তাদের সহযোগিতাই করেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি পালটে যায়। চাকরিহারাদের (SSC Scam) একাংশ ব্যারিকেড ভেঙে জোরপূর্বক ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তখনও পুলিশ সংযত ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে যেতেও বিকাশ ভবনের কর্মীদের বাইরে বেরোতে দেওয়া হচ্ছিল না।
সুপ্রতিম সরকার বলেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাও ছিলেন। পুলিশ তাদের যেতে দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করলেও তারা কানে তোলেননি বলে অভিযোগ। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিকাশ ভবনের কর্মীদের বাইরে আনতেই বল প্রয়োগ করা হয়েছিল। এমনকি লাঠিচার্জও প্রোটোকল মেনেই করা হয়েছিল বলে জানানো হয় পুলিশের তরফে। পালটা নাকি আন্দোলনকারীরা চড়াও হয় পুলিশের উপরে। যদিও চাকরিহারাদের তরফে চিন্ময় মণ্ডল বলেন, কোনো বলপ্রয়োগ তাঁরা করেননি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে তাঁদের চাকরি গিয়েছে। এখন যখন পুলিশ প্রোটোকলের কথা বলছে, যখন চাকরি স্বচ্ছ ভাবে দেওয়ার কথা ছিল, তখন কোথায় ছিল প্রোটোকল? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।