তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট, তালিকায় এই সাত জনও

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বড় পদক্ষেপ। আগেই জারি হয়েছিল নোটিস। এবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় আদালত অবমাননার রুল জারি করল উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সহ উচ্চ প্রাথমিকের বিক্ষোভকারী সাত জন চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে জারি হল রুল।

হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য ও আইনজীবীদের উপর হামলার ঘটনায় এদিন রুল জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের বৃহত্তর বেঞ্চ। সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

এদিন মামলার শুনানিতে কুণাল ঘোষের আইনজীবী জানান, ঘটনার দিন তাঁর মক্কেল উপস্থিত ছিলেন না। রাজারহাটে একটি সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। এদিকে আইনজীবীদের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘এরা কেউ আদালতের পরোয়া করে না। আদালত অবমাননার রুল জারি করুন। তাহলেই কথা শুনবে।’

হাইকোর্ট জানায়, ‘‘গত ২ মে প্রাথমিক ভাবে বলেছিলাম, এটা অপরাধমূলক কাজ। আদালত অবমাননার নোটিস পেলে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে। তবে কেউ হলফনামা জমা দেননি। কেন দেরি হল তা জানতে চাইছি না। সকলের বিরুদ্ধে রুল জারি করছি।’’ আদালতের নির্দেশের পরেও হলফনামা জমা না দেওয়ায় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে রুল জারি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ এপ্রিল কর্মশিক্ষা – শারীরশিক্ষায় অতিরিক্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানির শ্লথ গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের (Bikash Ranjan Bhattacharya) চেম্বারের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত সহ বেশ কিছু আইনজীবীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হাইকোর্ট চত্বরেই।

হাইকোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ায় ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কিছু আইনজীবী। তাতে
বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়,বিচারপতি সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ গড়ে দেন প্রধান বিচারপতি।

গোটা বিষয়কে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে উল্লেখ করে হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য আদালতের অবমাননা ফৌজদারি অপরাধ। ভবিষ্যতে যাতে এরম ঘটনা আর না হয় সুনিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। অভিযুক্তদের অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দেওয়ায় জন্য কমিশনারকে নির্দেশ।

আরও পড়ুন:‘আমাদের জন্য কিন্তু চাকরিগুলো যায়নি… আন্দোলনেরও একটা লক্ষ্মণরেখা আছে’! বড় বার্তা মমতার

উল্লেখ্য, সেইদিন বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখানোর পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল।
সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএম-এর সব নেতাদের ছবি দেখান। কুণালের প্রশ্ন ছিল, এক সময় যে বিকাশ ভট্টাচার্যরা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন মামলা লড়ার জন্য, এখন কেন তাঁরাই চাকরি কাড়তে মরিয়া হয়ে পড়েছে? এই সময়ই কুণাল বলেন, “আর বিচারপতির কিছু কিছু সিপিএমের আইনজীবীকে দেখলে কী হয় জানি না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছি। ভগবান-ভগবান-তারপর হল সাংসদ।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই হয় মামলা।

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/live/G-hEwW3EhAw?si=a2EZ7EqqkkZeFyeD

এর আগের শুনানিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের কি নোটিস দেওয়া হয়েছে কি না তা জানতে চায় আদালত। প্রাথমিক ভাবে এটা ক্রিমিনাল কন্টেমট বলে মনে করে আদালত। হলফনামা চাওয়া হয়। সন্তুষ্ট না হলে রুল জারি করা হবে বলা হয়েছিল। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ জুন।

Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

X