বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর মাত্র কয়েক মাস। তারপরেই শুরু হয়ে যাবে বিধানসভা নির্বাচন। ছাব্বিশের ভোটকে পাখির চোখ করে ঘর গোছাতে শুরু করেছে কমবেশি প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল। সম্প্রতি সংগঠনকে আরও মজবুত করতে বেশ কিছু রদবদলের কথা ঘোষণা করেছে তৃণমূল (Trinamool Congress)। তার মধ্যেই শিরোনামে উঠে এল শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল। ইতিমধ্যেই জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি।
রাজ্যে ফের তৃণমূল ভার্সেস তৃণমূল (Trinamool Congress)!
রাজনৈতিক দলে গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। অতীতে একাধিকবার চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছে জোড়াফুল শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা। এবার যেমন তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিরোধিতার জেরেই শাসকদলের ক্ষমতায় থাকা পুরবোর্ড ভেঙে দিতে হল। এমনকি এসডিও-কে প্রশাসক পদে বসানোর পরেও বিতর্ক থামেনি। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ও কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সেই প্রশ্ন তুলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর পুরসভার একাধিক তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর।
জানা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট পুরসভায় মোট ১৩টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১০টি ওয়ার্ড, ২টি ওয়ার্ড কংগ্রেস ও ১টি ওয়ার্ড রয়েছে বিজেপির দখলে। এতদিন এই পুরসভার পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তরণী বাউরি। তবে গত ২৪ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেন ৭ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে তৃণমূলের ৬ জন ও কংগ্রেসের ১ জন ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ‘সিঁদুর মুছতে বেরিয়েছিল, তাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে’! পাকিস্তানকে ‘শিক্ষা’ দিয়ে হুঙ্কার মোদীর
অভিযোগ করা হয়, পুরপ্রধান দুর্নীতিগ্রস্ত, সেই কারণে তাঁকে এই পদ থেকে সরাতে হবে। ২৩ মে এই অনাস্থা নিয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর এসডিও তথা মহকুমাশাসককে পুরসভার প্রশাসক পদে বসানো হয়।
সরকারের (Government of West Bengal) এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট পুরসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর। তরণী বাদে বাকি প্রত্যেকেই এতে রুষ্ট বলে খবর। এরপর সকলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের কথায়, অনাস্থা নিয়ে আলোচনা, ভোটাভুটি হওয়ার আগেই যেভাবে পুরবোর্ড ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে, তাতে তাঁরা তাঁদের ভোটদানের ন্যায্য অধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। সেই কারণে সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা জানাচ্ছেন।
অন্যদিকে তরণী আবার পুরসভার বাকি কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি, ‘কিছু কাউন্সিলরের মনোভাব কীভাবে টাকা পাব, চুরি করব! তাঁদের কেবল টাকা চাই! সেটারই প্রতিবাদ করে গিয়েছি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে মহকুমাশাসককে দায়িত্ব দিয়েছি। দলের কাউন্সিলরদের আচরণের কথা জেলা ও রাজ্যকে জানানো হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি’।
উল্লেখ্য, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে শিরোনামে তৃণমূলের (Trinamool Congress) গোষ্ঠী কোন্দল। জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট অবধি। আগামী ২৮ মে এই মামলার শুনানি হবে বলে খবর।