বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুলিশকে (West Bengal Police) অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগে নতুন করে বিপাকে পড়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুর থানার আইসিকে মা-বউ তুলে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর জেরে আজ শনিবার বোলপুর থানায় হাজিরা দেওয়ার নোটিশ পেয়েছেন অনুব্রত। বিতর্কের জেরে আবারও তাঁকে গ্রেফতার হতে হবে কিনা তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। অবশ্য এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পুলিশের (West Bengal Police) উপরে চোটপাট করার ঘটনা আকছার সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে।
হেনস্থার অভিযোগে কী পদক্ষেপ নিতে পারে পুলিশ (West Bengal Police)?
আইনের রক্ষাকর্তা হিসেবে বিপদে পড়লে মানুষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সেই পুলিশই যদি কখনো হেনস্থার শিকার হয় সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কী কী আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ (West Bengal Police)? আইন বলছে, পুলিশের আইসি বা কোনও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে যদি কেউ গালাগালাজ, মারধোর, প্রাণনাশের হুমকি দেয় তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার পুলিশের রয়েছে।
কোন কোন ধারায়: ফৌজদারী ভীতিপ্রদর্শন অর্থাৎ কাউকে প্রাণনাশ, পরিবারের ক্ষতি বা সম্মানহানিকে কেন্দ্র করে হুমকি দেওয়া, এক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫১ ধারায় মামলা করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৩৪ ধারায় সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা দুটোই হতে পারে। আর যদি হুমকি তেমন গুরুতর না হয় তাহলে কারাদণ্ডের মেয়াদ হতে পারে ২ বছর পর্যন্ত। সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্বপালনে বাধা দিতে জোর করা বা ভীতিপ্রদর্শক ভাষার ব্যবহারে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়াও গালিগালাজ, হুমকি মূলক কথাবার্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
আরো পড়ুন : মুখ বদলের হুজুগ, শুরু হতে না হতেই বড়সড় পরিবর্তন এই নতুন ধারাবাহিকে
পদক্ষেপ করতে পারে পুলিশ: কাউকে অপমান করা যাতে সেই ব্যক্তি প্রতিক্রিয়া দিতে বাধ্য হয়, শান্তিভঙ্গ হয় তাহলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৮২ ধারা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড, জরিমানা বা দুটোই হতে পারে। হুমকি মূলক, অপমানজনক কথাবার্তা, বিশেষ করে তা জনসমক্ষে হলে এই ধারা প্রযোজ্য হয়। একজন সরকারি কর্মচারীকে ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর কাজে বাধা দিলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৩৩ ধারায় (West Bengal Police) সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে।
আরো পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় বড় নির্দেশ শীর্ষ আদালতের
জনসমক্ষে অপমানজনক ভাষা ব্যবহারে মানহানি ঘটলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৯ ধারা অনুযায়ী ৩ মাস কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা দুটোই হতে পারে। এই ধারাগুলির অধীনে এফআইআর নথিভুক্ত করতে পারে পুলিশ। সেক্ষেত্রে ঘটনার উপযুক্ত প্রমাণ হিসেবে ভিডিও বা অডিও রেকর্ডিং থাকতে হবে। সাক্ষী দিতে পারেন প্রত্যক্ষদর্শী। হুমকির মাত্রা অনুযায়ী পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারে। ঘটনা এবং পরিস্থিতি কতটা সংবেদনশীল তার উপরে ভিত্তি করে অভিযুক্ত ব্যক্তি তৎক্ষণাৎ জামিন পেতে পারেন বা নাও পেতে পারেন।