বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha) কড়া ভাষায় প্রশ্ন করেন, ‘রাজ্য কি নারী-পুরুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চায়?’ এরপরেই বড় নির্দেশ দিয়ে দেন তিনি।
কোন মামলায় রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত। রাজ্য সরকার সেই সময় জমিদাতাদের জন্য বেশ কিছু চাকরি ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনা নিয়েছিল। জমিদাতাদের পরিবারে যদি কোনও বেকার সন্তান থাকেন, তাহলে তিনি ‘এক্সেম্পটেড কোটা’য় চাকরির ক্ষেত্রে নাম লেখাতে পারবেন বলে ঘোষণা করা হয়।
এরপর একজন জমিদাতার বিবাহিতা কন্যা রাজ্যের (Government of West Bengal) শ্রম দফতরে নিয়ে চাকরি জন্য আবেদন জানান। তবে তাঁকে জানানো হয়, শুধুমাত্র পুত্রসন্তান ও অবিবাহিতা কন্যারাই এই কোটার সুবিধা পাবেন। বিবাহিতা কন্যারা এর সুবিধা পাবেন না। এরপর সোজা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা।
আরও পড়ুনঃ একধাক্কায় ৪% DA বৃদ্ধি! রাজ্যের পেনশনভোগীদের জন্য সুখবর, কবে থেকে হাতে আসবে?
সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফ থেকে মামলাকারীর পক্ষে রায় দেওয়া হয়। আদালত জানায়, সুযোগ-সুবিধা বণ্টনের ক্ষেত্রে রাজ্য কোনও ভাবে লিঙ্গ অথবা বিবাহিত-অবিবাহিত বিভাজন করতে পারে না। হাইকোর্ট স্পষ্ট জানায়, ‘মা-বাবার সম্পত্তিতে ছেলে মেয়ের অধিকার যেমন সমান, একইরকমভাবে সরকারি কোটার ক্ষেত্রেও এই বৈষম্য গ্রহণযোগ্য নয়’।
এরপর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। তবে সেখানেও সুরাহা হয়নি। রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। এরপর সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় কার্যকর না হওয়ার কারণে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে ফের মামলা করেন মামলাকারী।
বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতেই রাজ্যের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি সিনহা। জিজ্ঞেস করেন,’ রাজ্য কি নারী-পুরুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চায়? বিবাহিত মেয়েদের কেন অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে?’ আদালতের নির্দেশ, সরকারি কোটার অধিকার থেকে একজন জমিদাতার বিবাহিত কন্যাকে কেন বঞ্চিত করা হয়েছে? ডিপার্টমেন্ট অফ এমপ্লয়মেন্টের সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে। ১০ জুলাই তাঁকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বেশ কিছু কড়া প্রশ্ন করেন হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি। সেই সঙ্গেই ডিপার্টমেন্ট অফ এমপ্লয়মেন্টের সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে আদালতে উপস্থিত হয়ে এর ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি কী বলেন সেটাই এবার দেখার।