বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কালীগঞ্জে উপভোট (Kaliganj By Election)। বৃহস্পতিবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন আয়োজিত হবে। তার আগে তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদের হয়ে সেখানে প্রচারে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তবে রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁকে। সেই ভিডিও শেয়ার করে তোপ দেগেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
ভিডিও শেয়ার করে কী লিখলেন সুকান্ত (Sukanta Majumdar)?
কালীগঞ্জ উপভোটে তৃণমূল আস্থা রেখেছে তরুণ মুখ আলিফার ওপর। তিনি প্রয়াত বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদের কন্যা। সম্প্রতি তাঁর হয়ে ভোটপ্রচারে গিয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখে পড়েন ফিরহাদ। শুনতে হয়, ‘এই অঞ্চল থেকে একটাও ভোট তোমরা পাবে না, কারণ রাস্তা বানাওনি’! ভিডিও শেয়ার করে এমনটাই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
সুকান্ত লেখেন, ‘কালিগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে জনরোষে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সৈনিক, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মানুষ মুখের ওপর স্পষ্ট বলে দিল- “ভোট দেবো না! এই অঞ্চল থেকে একটাও ভোট তোমরা পাবে না, কারণ রাস্তা বানাওনি! রাস্তা নেই, কিছু নেই শুধু ভোটের সময় আসো?”’
কালিগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে জনরোষে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সৈনিক রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
মানুষ মুখের ওপর স্পষ্ট বলে দিল — “ভোট দেবো না! এই অঞ্চল থেকে একটাও ভোট তোমরা পাবে না, কারণ রাস্তা বানাওনি!
রাস্তা নেই, কিছু নেই শুধু ভোটের… pic.twitter.com/Ifepnj74Xu— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) June 17, 2025
এরপরেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেন বিজেপি (BJP) সাংসদ। ২০২২-২০২৫ অবধি কত টাকা খরচ করে কত কিলোমিটার রাস্তা তৈরি ও সংস্কারের ঘোষণা করা হয়েছিল সেটা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ স্ত্রীর বাৎসরিকে লোকজন খাওয়াতে চান কালীঘাটের কাকু! কী বলল কলকাতা হাইকোর্ট?
সুকান্ত লেখেন, ‘২০২২ সালে ৩,১৪৭ কোটি টাকায় ১৪,৪১৬ কিমি রাস্তা বানানোর কথা ছিল- কোথায় গেল? ২০২৩-এ ৩,৩০১ কোটি টাকায় ১২,০৭১ কিমি রাস্তা- কিছুই তো নেই! ২০২৪-এ ৩,৮৬৮ কোটি টাকা ১২,০০০ কিমি রাস্তা আধুনিক করার দাবি- কোথাও খোঁজ নেই! ২০২৫ বাজেটে তো সরাসরি দাবি করা হল ১,৫০০ কোটি দিয়ে ৩৭,০০০ কিমি রাস্তা সংস্কার! শুনেই বোঝা যায় ভাঁওতা’!
বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথায়, ‘গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ জনগণের অভিযোগ একটাই: ভাঙাচোরা, ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তা, যেখানে উন্নয়নের নামগন্ধও নেই। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তা নাকি তৈরি হয়ে গেছে! এটাই সেই “পথশ্রী-রাস্তাশ্রী” নাটক, যার ঘোষণা চলেছে চার বছর ধরে- কাজ কোথায়?’
বিগত ৪ বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সুকান্তর দাবি, হিসেব থেকেই পরিষ্কার কয়েক হাজার কোটি টাকা উধাও হয়েছে। এদিকে গ্রামের মানুষ কাদামাটির ধ্বংসস্তূপ পেরিয়ে চলাফেরা করছেন। বেহাল রাস্তায় আটকে যায় মুমূর্ষু রোগীর অ্যাম্বুলেন্স। ভাঙাচোরা রাস্তায় দুর্বিষহ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের জীবন।
এরপর কালীগঞ্জের মানুষের প্রতিবাদের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি সাংসদ লেখেন, ‘কালিগঞ্জের মানুষ এবার আর চুপ করে থাকেনি। তারা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলে দিয়েছে- ভোট চাইতে এলে প্রশ্নের জবাব দিতেই হবে। উন্নয়নের নামে লুট আর চলবে না। তৃণমূলের “উন্নয়ন” আসলে এক দুর্নীতির কারখানা- নাম করে রাস্তা বানানোর, আসলে বানায় কমিশনের খাতা’।
সবশেষে সুকান্তর (Sukanta Majumdar) দাবি, বাংলা এবার জেগে উঠেছে। নিরীহদের ঠকানোর দিন শেষ। তাঁর কথায়, ‘দুর্নীতির তামাশা শেষ হবে, গণরোষ শুরু হয়ে গিয়েছে। লুটেরাদের শেষ ঘণ্টা বেজে গিয়েছে’।