বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ভর্ৎসিত হলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম (Firdous Samim)। জানা যাচ্ছে, বিচারপতির মুখে মুখে তর্ক করার জেরে ভর্ৎসনার মুখে পড়েন এই অভিজ্ঞ আইনজীবী। ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিও শেয়ার করে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। লিখেছেন, ‘কোনও আইনজীবীকে এমন ঝাড় খেতে দেখিনি’।
কুণালকে (Kunal Ghosh) পাল্টা দিলেন শামিম
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি উচ্চ আদালতে প্রাথমিকে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়োগ বিষয়ক একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এই ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে প্রাথমিকের ৩২,০০০ চাকরি বাতিল বিষয়ক মামলা কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন। এদিন এতটাই উচ্চস্বরে শামিম সওয়াল করেন, তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য।
আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি কেন চিৎকার করছেন? এটা কি চিৎকারের জায়গা? আপনি আদালতের বাইরে নেই। আদালতকে বাজার ভাববেন না। নিজের সীমা অতিক্রম করবেন না। কীভাবে ট্যাকেল করতে হয় সেটা আদালতের জানা আছে। দয়া করে এজলাসের মধ্যে আপনি চিৎকার করবেন না। আদালতে সাবমিশনের সময় ভদ্র ব্যবহার করুন’।
Honourable Justice Saugata Bhattacharyya to Advocate Firdous Samim: What do you think? By shouting you will get an order? Don’t do so.
শামীম কোর্টরুমকে টিভি স্টুডিও ভেবেছিল। ধমক খেয়েছে। pic.twitter.com/F4JmlB60Yw— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) June 17, 2025
এখানেই শেষ নয়! বিচারপতি ভট্টাচার্য (Justice Saugata Bhattacharya) আরও বলেন, সওয়াল করার নামে চিৎকার করলেই আদালত নির্দেশ দিয়ে দেবে ভাবছেন? ভর্ৎসনার মুখে পড়ার পর আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন শামিম।
আরও পড়ুনঃ DA নিয়ে চাপ! এ বার হাইকোর্টে ষষ্ঠ পে কমিশন মামলায় জোর ধাক্কা খেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার
সেই দৃশ্য আবার সমাজমাধ্যমের পাতায় শেয়ার করে কুণাল লেখেন, ‘ওই যে শামিম না কী যেন নাম, আজ আদালতকে টিভি অথবা পোর্টাল ভেবে চিৎকার করছিল। বিচারপতি প্রচুর ধমক দিয়েছেন। ধমক খাওয়ার পর মিউ মিউ’। তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার দাবি, ‘মাননীয় বিচারক যেমন বকলেন, কোনও আইনজীবীকে আমি এমন ঝাড় খেতে দেখেনি’।
কুণালের খোঁচার পাল্টা দিয়েছেন শামিমও। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, ‘আদালতের ফুটেজ উনি এভাবে পোস্ট করলেন কী করে? আদালত কি ওনাকে অনুমতি দিয়েছে?’
শামিম আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের কোনও কনটেন্ট নির্দেশ ছাড়া নেওয়া আদালতের অবমাননা। এটা কাম্য নয়। মামলা চলার সময় নানান রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। আজ ২০১৬ সালের প্রাথমিকের একটি মামলার শুনানি ছিল। এসএমএসের মাধ্যমে নিয়োগ হয়। বোর্ড এখনও ত্রুটিহীন তালিকা বের করতে পারেনি। এসব নিয়ে শুনানি চলছিল। আমি কথা বলছিলাম। আদালত প্রশ্ন করছিল, আমি জবাব দিচ্ছিলাম। আমার ভয়েসের টোন অনুসারে কথা বলেছিলাম। এটা তো হয়েই থাকে’।
উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর অবমাননা, আইনজীবী ফিরদৌস শামিম ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে হেনস্থার অভিযোগ হাইকোর্টে হওয়া মামলায় তৃণমূল নেতা কুণাল (Kunal Ghosh) সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করে আদালত। সেই নিয়ে আগে থেকেই কুণাল ও শামিমের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। এবারের ঘটনার পর তা আরও বৃদ্ধি পেল বলে মনে করা হচ্ছে।