বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি ২৬,০০০ চাকরি বাতিল ইস্যুতে এখনও সরগরম বাংলা। পর্যাপ্ত শিক্ষকের (School Teacher) অভাবে ধুঁকছে বাংলার বহু স্কুল। এই পরিস্থিতিতে ভোটের কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্ব বৃদ্ধি। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাতেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক।
ভোটের কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (School Teacher) কী দায়িত্ব দেওয়া হল?
কমিশন জানিয়েছে, বিএলও তথা বুথ লেভেল অফিসার (BLO) হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। আরও বলা হয়েছে, এই পদে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে সরকারি বেতনভুক্ত এবং ডিএ প্রাপক হতে হবে। এছাড়া অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এই দায়িত্ব দেওয়া যাবে না, সেক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের হাতে এই দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আগে তাঁর কোনও রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে কিনা সেটা যাচাই করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
এই নির্দেশিকা ঘিরেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের তরফ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারীর কথায়, ‘শিক্ষকতার কাজকে ক্রমাগত গৌণ করে তোলা হচ্ছে’।
আরও পড়ুনঃ ২৫,০০০ কর্মসংস্থান, নিউ টাউনে তৈরি হচ্ছে TCS-এর অফিস! ঘোষণা মমতার
এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বুথ লেভেল অফিসারের কাঁধে ভোটার তালিকা সংশোধন, ভোটার কার্ড বানানো সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকে। সেই দায়িত্ব এবার শুধু শিক্ষকদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। কমিশনের এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে আমরা জোরালো প্রতিবাদ জানাচ্ছি’।
কিংকরের কথায়, শিক্ষকের (Teacher) অভাবে এমনিতেই রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের কাঁধে শিক্ষা বহির্ভূত একটি কাজ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘এলাহাবাদ আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, শিক্ষা বহির্ভূত অন্যান্য কাজে শিক্ষকদের লাগানো চলবে না। অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাহলে কেন শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক করা হবে? আমরা এই নির্দেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি’। বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) পদের দায়িত্ব যাদের দেওয়া হবে, তাঁদের সম্মানজনক ভাতা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে আগে জানানো হয়েছিল, গ্রুপ সি অথবা তার উচ্চপদে কর্মরত কর্মীদের এই দায়িত্ব দেওয়া হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে এই কর্মীদের না পাওয়া গেলে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকা (School Teacher), অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের এই দায়িত্ব প্রদান করা যেতে পারে। এবার তাতে পরিবর্তন এনে পূর্ণ সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব দিতেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। কমিশনের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়েছে।