রাজীব মুখার্জী, হাওড়া-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা তোলার প্রভাব এবার পড়তে চলেছে পতাকার বাজারেও। পতাকা প্রস্তুতকারীদের বক্তব্য অন্তত তেমনটাই। গত সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষনার পর তেরঙ্গার চাহিদা স্রেফ যে বেড়েছে তাই নয়, হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। হাওড়ার একাধিক পতাকা মার্কেটের ছবিটা এরকমই। ক্লাব সংগঠন বা সরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্ডারই নয়, ব্যক্তিগতভাবে বাড়িতে পতাকা লাগানোর জন্যও কিনছেন অনেকেই।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ক্ষমতায় ফিরে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র বার্তা দিয়েছেন। সরকার গঠন হওয়ার পরে নিয়েছেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব কে রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে সম্প্রতি জম্মুও কাশ্মীর থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে ৩৭০ ও ৩৫ এ ধারা। লাদাখ কে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয়তা বোধের এক নতুন জোয়ার এই মুহূর্তে দেশবাসীর মনে উদ্রেক হয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের। তার ফলস্বরূপ কি স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ভারতীয় জাতীয় পতাকার চাহিদা এখন তুঙ্গে? বাজারে তেরঙ্গার চাহিদা অন্তত তেমনটাই বলছে।
হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন। তারপরেই গোটা দেশ জুড়ে পালিত হবে ৭২ তম স্বাধীনতা দিবস। তার প্রাক্কালে স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে হাওড়াতে জাতীয় পতাকা তৈরির ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।
আর এ সবকিছুর মূলেই রয়েছে স্বাধীনতার চেতনাকে উজ্জীবিত রাখা। জাতীয় চেতনাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকা অন্যতম একটি মাধ্যম।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরুকরে বিভিন্ন সরকারি অফিস, ক্লাব কিংবা অনেক বাড়িতেও উড়ানো হবে এই জাতীয় পতাকা। সারা বছর না হলেও স্বাধীনতা দিবস এলেই পতাকার চাহিদা বাড়ে। দিবসটি উদযাপনকে কেন্দ্র করে পতাকার চাহিদা অন্যান্য বছরের চেয়ে এই বছরে অনেক বেশি।
এই পতাকা তৈরির ব্যবসায়ী রাজীব হালদার বলছেন এই বছরে পতাকা তৈরির চাহিদা বেশ ভালো। প্রায় ২০-২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন তার কারখানায়। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই ব্যবসা তারা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন ধরণের ছোট বড় পতাকা তৈরিতে এই মুহূর্তে কর্মব্যস্ততা তার কারখানাতে। তবে এবার চাপটা একটু বেশিই। বলা যেতে পারে বাজার বেশ ভালোই। কাগজের পতাকা হোক বা কাপড়ের নানা সাইজের। সব পতাকার অর্ডারই বেশ ভালো। বিশেষত গত সোমবারের পর থেকে তো বটেই।
বলাই বাহুল্য, তেরঙা পতাকা দেশের ঐতিহ্য, সংষ্কৃতি ও গর্বের প্রতীক। গেরুয়া, সাদা, সবুজ রঙগুলি ত্যাগ, শক্তি ও উন্নতির প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। আর তার মাঝে বসা অশোক চক্র ‘ধর্ম চক্র’ হিসাবে পরিচিত। তাই আজ দ্বিতীয় মোদি সরকারের শাসনকালে চাহিদা বেড়েই চলেছে। এটাও কি তবে মোদির সাফল্য?