সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের জনগণ করলো ভারতের সমর্থন, সরব হলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী জি-7 সম্মেলনের সময় সাক্ষাত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে বলেছেন যে কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ইস্যু। ভারত এবং পাকিস্তান মিলে এটি সমাধান করবে। অন্য কোনও দেশকে এই বিষয় দখল দেওয়ার দরকার নেই। মোদির এই কথা শুনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষেপে গিয়ে ভারতকে পরমাণু হুমকি দিয়েছিলেন। পাকিস্তান, যে কাশ্মীর ইস্যুতে শান্ত থাকতে পারছে না, সেই পাকিস্তানের বাড়িতে বাড়িতে এখন অনেক হট্টগোল শুরু হয়েছে।  বেলুচিস্তানের জনগণ আলাদা দেশের দাবিতে আন্দোলন তীব্র করেছে।

IMG 20190830 111504

   

সিন্ধের জনগণ  স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ করছে, বেলুচিস্তানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আজ ফ্র্যাঙ্কফুর্টে পাকিস্তানি কনস্যুলেটের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। জার্মানিতে বালুচ রিপাবলিকান পার্টি ফ্র্যাঙ্কফুর্টে পাকিস্তান কনস্যুলেটের বাইরে স্বাধীনতা স্লোগান দেয়। বালুচ রিপাবলিকান পার্টির কর্মীরা ফ্রাঙ্কফুর্টে পাকিস্তান কনস্যুলেটের বাইরে বিক্ষোভ চলাকালীন বেলুচিস্তানে পাকিস্তানের সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য স্লোগান দিয়েছে।

বেলুচিস্তান ৭২ বছর আগে হওয়া  পাকিস্তানের সাথে একীকরণকে কখনো মেনে নেয়নি।পাকিস্তানের মোট জমির ৪০% বেলুচিস্তানে রয়েছে।পাকিস্তান ও বেলুচিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব ১৯৪৫, ১৯৫৮, ১৯৬২-৫৩, ১৯৮৩-৭৭ হতে থেকেছে । পাকিস্তানের দমন-পীড়নের পরে প্রায় দুই দশক ধরে সেখানে শান্তি ছিল। ১৯৯৯ সালে পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতায় এসে বালুচ ভূমিতে সামরিক ঘাঁটি খোলেন।এর পরে এখানে বহু বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন তীব্র গতি নিতে শুরু করে।

IMG 20190830 111532

অতএব, এখানে বিচ্ছিন্নতার আগুন নিরন্তর জ্বলছে। ২০০১ সালে পাক সেনাবাহিনীর অত্যাচারে ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। ২০০৬ সালে ২০ হাজার সমাজকর্মীকে অপহরণ করা হয়েছিল, যাদের খোঁজ এখনো অবধি পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালে ১৫৭ মানুষকে বিকৃত করা হয়েছিল। গিলগিট-ব্লুচিস্তান ন্যাশনাল কংগ্রেস নামে একটি আমেরিকান সংস্থা প্রকাশ করেছে গত ১ বছর যাবত দমন-পীড়নের তালিকা।

পাকিস্তান, যারা বার বার বলছে যে কাশ্মীরে অত্যাচার হচ্ছে, সেই পাকিস্তানের  রাজনৈতিক দলগুলিই পাকিস্তানের মিথ্যাচার খুলে দিয়েছে সবার সামনে। এমকিউএম কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি বলেছে যে পাকিস্তান নিজেই করাচি ও সিন্ধ প্রদেশের অন্যান্য শহরগুলিতে অপরাধ ও অত্যাচার করছে। জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতির থেকে এখানের পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।

কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সহ-সমন্বয়কারী কাসিম আলী রাজা এবং কমিটির সদস্য মোস্তফা আজিজবাদী, মনজুর আহমেদ ও আরশাদ হুসেন বলেছেন, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠানগুলি দেশের বালুচ, মুহাজিরো, পশতুন, সিন্ধি এবং অন্যান্য নিপীড়িত মানুষের উপর অত্যাচার করছে। আর এই নৃশংসতা বেশ ব্যাপক আকারেই করা হচ্ছে। রজা বলেছিলেন যে পাকিস্তানের ‘দুষ্ট’ সেনাবাহিনী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নামে হাজার হাজার নিরীহ নির্বোধকে হত্যা করেছে। কয়েকশত মানুষের থেকে  তাদের ঘর, বাড়ি, সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হয়েছে।  পাকিস্তানের কোনও সরকারী প্রতিষ্ঠান মুহাজিরো এবং অন্যদের কন্ঠ শুনতে রাজি নয়।

IMG 20190830 111520

মোস্তফা বলেছিলেন যে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে এমকিউএম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তবে বাস্তবতা হচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী করাচি ও অন্যান্য শহরে নৃশংসতা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি কোন মুখে  ভারতকে কাশ্মীরের উপর নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত করতে পারেন? আরশাদ বলেছিলেন যে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী, যারা নিজেকে সাহসী বলে অভিহিত করেন, তারা কাশ্মীর ইস্যুতে উত্তেজনা তৈরি করছে। কিন্তু এদিকে মুহাজির, বালুচ, পশতুন এবং পাকিস্তানের অন্যান্য নিপীড়িত মানুষকেই তাড়না করছে।

সম্পর্কিত খবর