বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত আগস্ট মাস থেকেই আরজিকর মেডিকেল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীর নির্মম ধর্ষণ হত্যাকান্ডের পর থেকে কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor)। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে দিনের পর দিন সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা বন্ধ রেখেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor)। যার জেরে চরম ভোগান্তির অভিযোগ তুলেছিলেন রোগীর পরিবার পরিজনেরা।
জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) নামে গুরুতর অভিযোগ
এবার এই জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctor) বিরুদ্ধেই উঠল গুরুতর অভিযোগ। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ আন্দোলন চলাকালীন দীর্ঘদিন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ থাকায় বেহাল অবস্থা হয় রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামোর।
রাজ্যের এই সমস্ত ‘বিপ্লবী’ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আন্দোলনের নাম রাজ্যজুড়ে সরকারি হাসপাতাল গুলিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করলেও প্রাইভেট নার্সিংহোম গলিতে চুটিয়ে প্র্যাক্টিস করেছেন তাঁরা। আর এই ভাবেই গত কয়েক মাসে কলকাতার রাজপথে ‘জাস্টিস ফর আরজিকর’ স্লোগান তুলে প্রতিবাদ আন্দোলনের নামে সরকারি স্বাস্থ্যপরিসেবা বন্ধ রেখে বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম গুলিতে প্র্যাকটিস করেই কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা না দিলেও বেসরকারি হাসপাতালে কমপক্ষে ৭৪ হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন। যার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে মোট ৫৪.৩৯ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় এছাড়াও স্টার হেলথ, ওরিয়েন্টাল ইনসিওরেন্স, নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসিওরেন্স, ন্যাশনাল ইনসিওরেন্সের মতো বহু মেডিক্লেম সংস্থার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা উপার্জন করেছেন এই ‘প্রতিবাদী’ জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ।
প্রসঙ্গত কদিন আগেই রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসকদের সংঘঠন দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে।এই আবহে জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অতনু বিশ্বাসের প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, ‘যাঁরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না করে ভাতা নিলেন আবার বেসরকারি হাসপাতালে প্র্যাকটিসও করলেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয় কেন?’
আরও পড়ুন: হঠাৎ অসুস্থ বিমান বসু! তড়িঘড়ি ভর্তি হাসপাতালে, কি হয়েছে প্রবীণ CPM নেতার?
এক্ষেত্রে আগেই স্বাস্থ্য সাথীর প্রসঙ্গ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার এই অভিযোগ সামনে আসতেই কর্মবিরতির নামে প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করা জুনিয়র চিকিৎসকদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। আর এদিন অভিযোগ সামনে আসতেই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘বিপ্লবীরা কিছু বলবেন?’
অন্যদিকে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের স্পষ্ট জবাব, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্নীতির বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই। সেখানে কেউ এরকম করে থাকলে নিশ্চয়ই শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। তবে এ সব বলে নির্যাতিতার বিচারের আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়া যাবে না।’