বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির জনক গান্ধীজির অবদানের কথা কারোরই অজানা নয়। অবশ্য শুধু তার সংগ্রামী জীবন নয়, তার দর্শন আজও প্রভাবিত করে বহু মানুষকে। এবার সেই গান্ধী মূর্তিরই চশমা খুলে নিয়ে পড়িয়ে দেওয়া হলো সানগ্লাস। এমন আজব কান্ড ঘটিয়ে গণধোলাই এবং জেলহাজতের আইনি প্যাঁচে পড়তে হলো পূর্ব বর্ধমানের এক ব্যক্তিকে।
পূর্ব বর্ধমানের শালবাগানের ওই বাসিন্দার নাম বিনয় রায় ওরফে লেদু। এলাকার বিশিষ্ট মাতাল হিসেবেই পরিচিত সে। শনিবার সকালে শহরের বাসিন্দারা হঠাৎ আবিস্কার করে, গান্ধী মূর্তির চোখে নেই গোল চশমা। বরং তার বদলে পড়ানো হয়েছে একটি সানগ্লাস। ঘটনাটির অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় তা ঘটিয়েছে মাতাল লেদু। অবশ্য পুরোটাই নেশার ঘোরে। গান্ধীজিকে সে নাকি ডাকে ‘কাকু’ বলে। নেশার ঘোরে কাকুকে মর্ডান করতে গিয়েই তার চোখে পুরনো গোল চশমার বদলে ঝাঁ-চকচকে নতুন সানগ্লাস পরিয়ে দেয় সে।
ঘটনা জানাজানি হতেই অবশ্য রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় লেদুকে। প্রথমে হালকা গণধোলাই এবং পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা অনন্ত পাল বলেন, ‘‘মহাত্মা গাঁধীকে গোটা ভারত পুজো করে। সেখানে লেদু গাঁধীমূর্তির চশমা ভেঙে দিয়ে চিৎকার করে বলে, মহাত্মা গান্ধী আজ অন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই কাজ চরম নিন্দার।’’
অবশ্য সাথে সাথেই ভুল স্বীকার করে নিয়েছে লেদু। গান্ধী মূর্তির পা ধরে ক্ষমাও চেয়েছে সে। নেশা কাটতেই লেদু বুঝতে পারে, কি চরম কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে সে৷ কিন্তু তখন আর কিছু করার নেই। সংবাদমাধ্যমকে সে জানায়, “এখানেই সব সময় বসি। ওনাকে কাকু বলে ডাকি। এই ঘটনা এমন হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি। আমি ক্ষমা চেয়েছি। বড্ড ভুল হয়ে গিয়েছে।”
অবশ্য একদিকে যেমন এই ঘটনার চরম নিন্দায় মুখর হয়েছেন সকলে। তেমনই আবার অনেকেই বলছেন, গান্ধীজীর নাম নিয়ে আজকাল এমন এমন দুর্নীতি হচ্ছে তার কাছে এই অপরাধ প্রায় কিছুই নয়। কাজটা যে লেদু ঠিক করেনি একথা সর্বাংশে সত্যি। কিন্তু গান্ধীজী নিজেই ক্ষমার বাণী প্রচার করে গিয়েছেন। হিংসার বদলে অহিংসাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এমনকি দাঙ্গার সময়েও ‘রক্তের বদলে রক্ত’ নীতির বিরোধিতাই করেছেন তিনি। তাই লেদু ভুল করলেও তার অনুতাপের কারণে হয়তোবা ক্ষমা পেয়ে যেত স্বয়ং গান্ধীজীর কাছেও।