বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এবার ৪৯ বছরে পা দিলেন বাংলার দাদা। ভারতীয় ক্রিকেটকে আক্ষরিক অর্থে বদলে দেওয়া এই ক্রিকেটারের নাম সৌরভ গাঙ্গুলি (Sourav Ganguli)। ১৯৯৬ সালে বেহালার গলি থেকে লর্ডসের ময়দান, আবার গ্রেগের কারিকুরিতে বাদ পড়ার পর দুরন্ত কাম ব্যাক। সব মিলিয়ে বাঙালির আবেগের নাম সৌরভ গাঙ্গুলী। তবে শুধুই কি বাঙালি? সারাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদেরই আবেগের নাম সৌরভ-শচীন। ওপেনিং জুটি ভেঙে যাওয়ার এতদিন পরেও এখনও তাই ক্রিকেটের ভগবানের সঙ্গেই উচ্চারিত হয় দাদার নাম।
তরুণ যুবরাজ, হরভজন, বীরেন্দ্র সেওয়াগ, জাহির খান, আশিস নেহেরাদের ভরসা ছিলেন তিনি। আর একইসঙ্গে ভিভিএস লক্ষ্মণ, রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুলকার, অনিল কুম্বলেদের নিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন বিদেশের মাটিতে ভারত শুধু ম্যাচ বাঁচাতে আসে না, আসে জিততে। ২০০৩ সালে একটুর জন্য হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল বিশ্বকাপ এবং ২০০০ সালের আইসিসি নকআউটেও রানার্সআপ। কিন্তু পিছন থেকে একটা গোটা দলকে প্রথম তিনের তালিকায় টেনে তুলেছিলেন তিনি। তৈরি করেছিলেন এমন এক দল যা পরবর্তী ক্ষেত্রে তৈরি করল ইতিহাস।
আর তাই ২০০২ লর্ডসের ব্যালকনি থেকে জামা ওড়ানোই হোক, বা অস্ট্রেলিয়ায় অস্ট্রেলিয়াকে হারানো কিম্বা আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন দাদার স্মৃতিটা এখনও অমলিন।কোনো পক্ষপাতিত্ব নয়, মুম্বাই লবিকে ভেঙে সারা দেশের প্রতিভাদের যেন এক ভরসা হয়ে উঠেছিলেন সৌরভ। আর তাই এখনও সেই আবেগ মরেনি। আজ তার রিটায়ারমেন্টের এত বছর পরেও বেহালার বাড়ির সামনে দেখা গেল অদ্ভুত এক দৃশ্য। জন্মদিনে সৌরভকে শুভেচ্ছা জানাতে কেরালা থেকে পায়ে হেঁটে বেহালা এলেন এক সমর্থক।
https://fb.watch/v/uZUX9lg_/
কাল রাতেই সৌরভের বেহালার বাড়ির সামনে পৌঁছান তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তার ভাষা বুঝতে পারছিলেন না সিকিউরিটিরা। রাজকুমার সত্যনারায়ন নামের এই দাদা সমর্থক, তখন তাদের হাতে তুলে দেন একটি চিঠি। চিঠিতে লেখা, “প্রিয় দাদা, আমি পায়ে হেঁটে কেরল থেকে হিমালয়ে যেতে চাই। সেই সূত্র ধরেই এগিয়ে চলেছি। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল কলকাতায় আপনার নিজের বাড়িটি একবার দেখার। আমি জানি নিরাপত্তার কারণে হয়তোবা আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করা সম্ভব নয়, কিন্তু আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত বাইরে থেকেও আপনার বাড়িটি দেখতে পেয়ে। দাদা আপনি কি জানেন, আমরা সকলেই ডানহাতি কিন্তু আমি আমার ভাইকে ছোটবেলা থেকে ট্রেনিং দিয়েছি একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে।”
নিরাপত্তারক্ষীদের কারণে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে না পারলেও, রাজকুমার অবশ্য চলে যাননি। রাত বারোটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই ‘শুভ জন্মদিন দাদা’ বলে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। তারপর চলে যান এই ফ্যান। তার চিঠি থেকে জানা যায় তিনি একজন মিউজিসিয়ানও। ছোট্টবেলা থেকে দাদার প্রতি ভালোবাসাই তাকে টেনে এনেছে কলকাতায়। সমর্থক তো অনেকেই হয়, কিন্তু এমন সমর্থকই বা হয় কজন যিনি জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে পায়ে হেঁটে কেরালা থেকে চলে আসতে পারেন কলকাতা।