বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ কিম্বা বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ ওঠে হামেশাই। সে সিনেমাতেই হোক বা বাস্তব জগতে বারবারই আইনের রক্ষাকর্তাদের আইন ভঙ্গের ছবি সামনে এসেছে। তবে এবার সামনে এলো এমন এক খবর যা আপনার শ্রদ্ধার উদ্রেক করতে বাধ্য। প্রায় ৫ টন তরমুজ বিনামূল্যে সেনা জওয়ানদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু বিনা মূল্যে তা নেননি জওয়ানরা, বরং প্রকৃত বাজার মূল্য দিয়ে কিনে নিয়েছেন সমস্তটাই। এই ঘটনা জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে সকলের।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের বোকারো এলাকায়। গত বছরের মতো এ বছরও লকডাউনের কারণে ভীষণরকম ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি। মাঠের ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকরা। যার ফলে পচে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে বহু কৃষিদ্রব্য। একই অবস্থা ঝাড়খন্ডের বোকারোর অধিবাসী রঞ্জন কুমার মাহাতোর। রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পরেও কৃষি কাজকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন রঞ্জন। এবারও তার ক্ষেতে যথেষ্ট ভাল হয়েছিল ফসলও। নিজের জমিতে প্রায় ১২০ টন তরমুজ ফলিয়েছিলেন রঞ্জন।
কিন্তু একে বাজারে দাম নেই তার উপর লকডাউন। লকডাউনের কারণে এখন খুব অল্প সময়ই খোলা আছে বাজার। যার জেরে এমনিতে যত তরমুজ বিক্রি হয় তাও হচ্ছিলোনা রঞ্জনের। তরমুজ এমন ফসল যা খুব বেশিদিন ফেলে রাখা যায় না। তাই শেষ পর্যন্ত, অবশিষ্ট ফসল সকলকে বিলিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই কাছের এক আর্মি ক্যাম্পে গিয়ে তার জমি থেকে ৫ টন তরমুজ নিয়ে যাবার অনুরোধ জানান রঞ্জন।
রঞ্জনের সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগে ইন্ডিয়ান আর্মির শিখ রেজিমেন্টের। এত পড়াশোনা করার পরেও শেষ পর্যন্ত কৃষিকাজকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন রঞ্জন একথা শুনেও মুগ্ধ হন তারা। তবে বিনা পয়সায় কষ্ট করে ফলানো ফসল নিতে রাজি হননি জওয়ানরা। শেষ পর্যন্ত রঞ্জনের ক্ষেতে এসে সম্পূর্ণ বাজার মূল্য দিয়ে তার কাছ থেকে ৫ টন তরমুজ কিনে নেয় শিখ রেজিমেন্ট। তাদের এই ব্যবহারে রীতিমত মুগ্ধ রঞ্জনও। আগামী দিনে নিজের ফসল বিক্রি কিছুটা আশাও দেখছেন তিনি।