বাংলা হান্ট ডেস্ক: কার ভাগ্যে কি লেখা আছে তা কেউই বলতে পারেনা। আজ যিনি সহায়সম্বলহীন ভাগ্যের চাকায় কালকেই তিনি হয়ে উঠতে পারেন কোটিপতি। এই কথা যে চরম সত্য তা ফের একবার প্রমাণিত হল রাজ্যে। শুধু তাই নয়, রাতারাতি কোটিপতি হয়েই এক ব্যক্তি এমন কান্ড ঘটালেন যা শুনে অবাক হয়েছেন সকলেই। আর তারপর থেকেই রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকায়।
জানা গিয়েছে যে, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের দক্ষিণ রায়পুরের ৯ নম্বর ঘেরীর বাসিন্দা বছর আটত্রিশের আলফাজুদ্দিন পাইক নিজের ঘরেই শুয়েছিলেন বুধবার রাতে। কিন্তু, হঠাৎই তারপর থেকে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা তাঁর। এমতাবস্থায়, চতুর্দিকে তাঁর সন্ধান চালালেও শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার। আর তারপরেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় সকলের। পুলিশের তল্লাশিতে বৃহস্পতিবার ভোর নাগাদ বাড়ির কাছের এক কলাবাগান থেকে খোঁজ মেলে তাঁর।
এরপরেই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে হঠাৎ কলাবাগানে লুকোতে গেলেন কেন আলফাজুদ্দিন? তার উত্তরে জানা গিয়েছে, গত বুধবার একটি লটারির দোকান থেকে লটারির টিকিট কেটেছিলেন তিনি। তারপর আর পাঁচটা দিনের মতই রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে ঘরের মেঝেতে ঘুমোতে যান তিনি। ঠিক তখনই লটারির দোকানদারের ফোন মারফত আলফাজুদ্দিন জানতে পারেন যে এক মুহূর্তেই কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন তিনি।
এদিকে, ওই খবর শুনেই হতচকিত হয়ে যান তিনি। শুধু তাই নয়, তারপরেই টিকিটটি চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে সময় নষ্ট না করেই তিনি আত্মগোপন করে নেন। যদিও, তারপরে বাড়ির লোকজন তাঁকে খুঁজে না পেয়ে ঢোলাহাট থানায় বিষয়টি জানান। তারপরে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশকে দেখেই কলাবাগান থেকে বেরিয়ে আসেন আলফাজুদ্দিন।
পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন হঠাৎ লটারিতে কোটি টাকা জিতে গিয়ে সারারাত ধরে তিনি লুকিয়ে থাকেন কলাবাগানে। তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, যে তাঁর এই টিকিটটি চুরি হয়ে যেতে পারে। যে কারণে রীতিমত মশার কামড় সহ্য করেই তিনি লুকিয়ে থাকেন সেখানে। এদিকে, এই ঘটনার পরেই অবাক হয়ে যান উপস্থিত সকলে। পাশাপাশি, পুলিশ আলফাজুদ্দিনের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। কোটিপতি হয়ে তিনি একটি বাড়ি তৈরি করতে চান বলেও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আলফাজুদ্দিন পেশায় দিনমজুর। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তিনি থাকেন পূর্তদপ্তরের জমিতে বেড়ার ঘরে। এদিকে, নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মত অবস্থায় তিনি যেটুকু রোজগার করতেন তার বেশিরভাগটাই উড়িয়ে দিতেন লটারির টিকিট কিনে। এমনকি, ধারদেনাও করতে হত তাঁকে। কিন্তু, আজ সেই লটারির টিকিট কিনেই নিজেকে কোটিপতি বানিয়ে নিলেন আলফাজুদ্দিন।