বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময় যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে আত্মহত্যার ঘটনা। এমনকি, আট থেকে আশি সব বয়সীদের মধ্যেই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার প্রবণতা ক্রমশ ঘটছে। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এল রাজস্থানের আলওয়ার জেলা থেকে। যেখানে একটি সামান্য কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে এক নাবালক।
জানা গিয়েছে যে, স্কুলের ইউনিফর্ম না পেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ১৫ বছরের ওই নাবালক। এমনকি, তার মৃতদেহের কাছে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে। যেখানে মৃত্যুর আগে মায়ের উদ্দেশ্যে এক বার্তা দিয়েছে সে। মূলত, সেটিতে লেখা ছিল “এটা আমার পক্ষ থেকে মায়ের জন্য জন্মদিনের উপহার।”
এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাবালকের দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের শেষে পরিবারের সদস্যদের হাতে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়। এদিকে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ জানিয়েছে যে, ওই নাবালক তার মায়ের উদ্দেশ্যে সুইসাইড নোটে লিখেছে, “এখন তুমি স্কুলে যেতে দেরি করবে না। বিশ্বের সেরা জন্মদিনের উপহার, শুভ জন্মদিন মামি জি।” এমতাবস্থায়, পুলিশ ওই সুইসাইড নোটটি বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি, ওই নাবালকের পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জন্মদিনে ছেলেকে বকা দেন মা: জানা গিয়েছে যে, নিহত ওই নাবালকের মা একজন শিক্ষিকা। পাশাপাশি, কয়েক বছর আগেই তার বাবা মারা যান। এমতাবস্থায়, মা-ছেলে দু’জনেই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। এদিকে, ছেলে দু’দিন ধরে মায়ের কাছ থেকে স্কুলের ইউনিফর্ম কেনার জন্য জোর করছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষিকা সেটি এনে দেবেন বলেও জানান।
এদিকে, গত শুক্রবার ওই নাবালক তাঁর মায়ের জন্মদিনে ফের ইউনিফর্ম কিনে দেওয়ার জন্য জোর করে। আর তখনই তাকে ধমক দিয়ে ওই শিক্ষিকা জানান তাঁর স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন যে, সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে তিনি পোশাকটি এনে দেবেন। কিন্তু এই বিষয়টিই যে এত বড় ঘটনা ঘটিয়ে দেবে তা বিন্দুমাত্র বুঝতে পারেন নি তিনি।
প্রতিবেশীদের সহায়তায় দরজা ভাঙার পর সামনে আসে ঘটনা: এদিকে, স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ওই শিক্ষিকা দেখেন যে, ঘর ভিতর থেকে বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায়, তিনি তাঁর ছেলেকে বেশ কয়েকবার ডাকেন। কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে ফেলেই স্তম্ভিত হয়ে যান সকলে। তাঁরা দেখতে পান ওই নাবালকের দেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এদিকে, তারপরেই দ্রুত পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।