ম্যাচ হারার নতুন নতুন উপায় আবিষ্কার করে চলেছে RCB! পুরান ঝড়ে নাটকীয় ম্যাচে ১ উইকেটে জয় LSG-র

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ এভাবেও ম্যাচ হারা যায়? রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর বনাম লখনউ সুপারজায়ান্টস ম্যাচে আরসিবির পারফরম্যান্স দেখার পর ভক্তদের মনে এখন এই একটা প্রশ্নই উঠছে। কোহলি, অধিনায়ক দু প্লেসিস এবং ম্যাক্সওয়েলের শতরান ফিকে হয়ে গেল পুরান, স্টোইনিসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে। শেষ ওভারের শেষ বল অবধি চললো নাটক। শেষ পর্যন্ত এক উইকেটে জয় পেল লখনউ সুপারজায়ান্টস।

এর আগে মরশুমে চিন্নাস্বামীর উইকেটে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারতে হয়েছিল বিরাট কোহলিদের কাছে। সেই কথা মাথায় রেখেই হয়তো লখনউ সুপারজায়ান্টসের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল টসে জিতে রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেন। দ্বিতীয় ওভার থেকেই আক্রমণের রাস্তা বেছে নেন বিরাট কোহলি। সেই সময় শুধুমাত্র তাকে সঙ্গ দেওয়ার কাজটা করছিলেন দু প্লেসিস।

৩৫ বলে নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন কোহলি। কিছু অসাধারণ দৃষ্টিনন্দন শট খেলেছিলেন তিনি পেস এবং স্পিন দুই ধরনের বোলিংয়ের বিরুদ্ধেই। কিন্তু তিনি ৬১ রানের বেশি করতে পারেননি। বিরাট কোহলি আউট হতেই নিজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন দু প্লেসিস। রবি বিশ্নইয়ের বলে ১১৫ মিটার দীর্ঘ ছক্কা মারেন তিনি একবার। বিরাট কোহলির মত তিনিও মরসুমের তৃতীয় ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় অর্ধশতরান তুলে নেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন অজি পাওয়ার হিটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ২৪ বলে নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন তিনি যা ছিল এই মরশুমে তার প্রথম। গোটা লখনউ দলে একমাত্র ভালো বোলিং করতে পেরেছিলেন পেসার মার্ক উড। ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ম্যাক্সওয়েলকে আউট করেছিলেন তিনি।

২১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতন হয়েছিল লখনউয়ের। প্রথম ওভারেই সিরাজের শিকার হয়ে ফিরে যান বিপজ্জনক ক্যারিবিয়ান ওপেনার কাইল মেয়ার্স। এরপর আজ দীর্ঘদিন পরে আইপিএলে প্রত্যাবর্তন করা আরসিবির প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার দীপক হুডা এবং ক্রুনাল পান্ডিয়াকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠিয়ে আরসিবির জয় যেন প্রায় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন।

কিন্তু আজ ফের একবার প্রমাণিত হলো যে টার্গেট যতই বড় হোক না কেন এবং হাতে যত কমই উইকেট থাক না কেন, আইপিএলে খেলা ৯০ শতাংশ সময় শেষ ডেলিভারি হওয়ার আগে অবধি শেষ হয় না। ৩০ বলে ৬৫ রানের যে অসাধারণ ইনিংস খেলে লখনউকে ফিরিয়ে আনার লড়াই শুরু করেছিলেন সেটিকে পূর্ণতা দেন নিকোলাস পুরান। ক্যারিবিয়ান তারকা মাত্র ১৫ বলে নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন যা চলতি আইপিএলের দ্রুততম এবং আইপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতরান।

এলএসজি অধিনায়ক রাহুল চূড়ান্ত ব্যর্থ হলেও তরুণ ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার আয়ুশ বাদোনি দুর্দান্তভাবে সঙ্গ দেন ক্যারিবিয়ান তারকাকে। যখন ১৯ বলে ৬২ রান করে শেষপর্যন্ত সিরাজের বলে আউট হলেন তখন ম্যাচ লখনউয়ের দখলে চলে এসেছে। বাকি কাজটা করে আসার দায়িত্ব ছিল আয়ূশ বাদোনির কাঁধে। কিন্তু ২৪ বলে ৩০ রান করে যখন আর ৭ রান বাকি জয়ের জন্য তখন তিনি হিট উইকেট করে ফিরে আসেন। এরপর শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। তাতেও দুটি উইকেট নিয়ে এলএসজিকে জয়ের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন হর্ষল। কিন্তু শেষ বলে একটুর জন্য নন স্ট্রাইকার প্রান্ত থেকে অনেকটা বেরিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারকে রান আউট করতে পারেননি হর্ষল প্যাটেল। শেষ বলটি স্ট্রাইকার মিস করলেও তুই ব্যাটারি রান নেওয়ার জন্য দৌড়ন এবং কিপার দীনেশ কার্তিক বলটি ঠিকঠাক ধরতে না পারায় রান আউট করতে ব্যস্ত হয়ে আরসিবি এবং হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ ১ উইকেটে জিতে নেয় এলএসজি।

 


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর