এমন এক স্কুল যেখানে প্রবীণ মহিলারা করেন নিজেদের স্বপ্ন পূরণ

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সংসারের চাপে পরে বহু মহিলারা (Women) তাঁদের বহু স্বপ্ন সত্যি করতে অসমর্থ হয়। বহু মহিলারা তাঁদের সামান্য তম পড়াশোনা টুকুও শিখতে অক্ষম। তাই নিজের অপূর্ণ আশা পরিপূর্ণ করতে, মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) থানে জেলার ফাঙ্গানে গ্রামের অজিবায়েচি স্কুল নিয়ে এসেছে এমন এক উদ্যোগ, যেখানে পরিবারের প্রবীণ মহিলারা তাদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। শিখছে পড়াশুনা।

mohila 444

প্রবীণ মহিলারা গোলাপি শাড়ি পড়ে যান অজিবায়েচি স্কুলে
গ্রামের একটি বাড়িতে মাত্র দুটি ঘর নিয়ে শুরু হয়েছিল এই পঠন পাঠনের কাজ। প্রতিদিন দুপুর ২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত এই ক্লাস করত। নিজেদের সুপ্ত বাসনাকে পূর্ণতা দিতে গ্রামের প্রবীণ মহিলারা গোলাপি শাড়ি পড়ে, তাঁদের নাতি-নাতিনিদের মতো করেই রোজ এই স্কুলে আসতে শুরু করে। ক্লাস ঘরে হোমওয়ার্ক না করে নিয়ে গেলে, তারা আবার বাচ্ছাদের ন্যায় নানা অজুহাতও দিয়ে থাকে।

mohila 333

 

শিবাজি জয়ন্তী উৎযাপনের দিন কিছু গ্রামীণ প্রবীণ মহিলাদের পবিত্র পাঠ শুনে অজিবায়েচি স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেন
এই অজিবায়েচি স্কুলের প্রবর্তক এবং মতিরাম দালাল চ্যারিটেবল ট্রাস্টের জেলা পরিষদের শিক্ষক ও সমাজসেবক যোগেন্দ্র বাঙ্গার জানিয়েছেন, ‘২০১৬ সালে গ্রামের শিবাজি জয়ন্তী উৎযাপনের দিন কিছু গ্রামীণ প্রবীণ মহিলার ‘পবিত্র পাঠ’ পড়া শুনেছিলাম। তখন গ্রামের আরও অনেক মহিলারা জানিয়েছিলেন, তারাও এটি পাঠ করতে পারেন। সেই থেকেই এই অজিবায়েচি স্কুল খোলার ধারণা আমার মাথায় আসে’। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। ওই বছরই অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৮ ই মার্চ তিনি এই গ্রামীণ বিদ্যালয় চালু করেন।

mohila 222

অজিবায়েচি স্কুলে শিক্ষা ভাল করে গর্বিত প্রবীণ মহিলারা
নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে একজন প্রবীণ মহিলা জানান, ‘এখন যদি কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করে, যে আমি জীবনে কোন ভাল কাজ করেছি কিনা? তাহলে আমি উত্তর দেব, হ্যাঁ, আমি স্বাক্ষর হতে পেরেছি’।

হিন্দি-ইংরেজি বর্ণমালা, গণিত, কবিতা, শিল্প ইত্যাদি পাঠ পড়ানো হয় এই অজিবায়েচি স্কুলে। মহিলারা উজ্জ্বল গোলাপি রঙের শাড়ি পড়ে বিদ্যালয়ে আসেন। তাঁদের স্বল্প দাঁত, আবার কারো দাঁত বিহীন প্রাণখোলা হাসি, এক অপার্থীব মুহূর্তের সৃষ্টি করে। সমগে ভারতে আজ এই অজিবায়েচি স্কুল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

mohila 5555

গোটা ভারতের কাছে এই স্কুল আজ এক দৃষ্টান্ত মূলক স্থাপন
আজ এই গ্রামের মহিলারা ফোনে কথা বলতে শিখে গিয়েছেন, তারা গ্রামের সভায় তাঁদের মতামত রাখতে পারেন। এর মধ্যে সবথেকে বড় বিষয় আগে তারা যে কাজগে টিপ ছাপ দিত, আজ তারা সেখানে নিজের হাতে স্বাক্ষর করতে পারে। এর মাধ্যমে গ্রামের তাঁদের হারিয়ে যাওয়া মর্যাদারও পুনর্বিকরণ ঘটেছে। এই অজিবায়চি স্কুল ভারতের সমস্ত মানুষের কাছে মহারাষ্ট্রের প্রবীণ মহিলাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়।

Smita Hari

সম্পর্কিত খবর