বাংলা হান্ট ডেস্ক : রাজ্যে ঘটে চলা একের পর এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগেই রাজ্য পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। এই মুহূর্তে পুলিশ মানেই অনেকের কাছেই আতঙ্ক। তাই আজকের দিনে আমজনতার কাছে ‘রক্ষকই ভক্ষক’ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের হেল্প লাইন ‘দিদিকে বলো’তে (Didi Ke Bolo) ফোন করে থানার ওসির বিরুদ্ধেই তোলাবাজির অভিযোগ তুললেন বীরভূমের কীর্ণাহার থানার মিরাটি গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলা।
‘দিদিকে বলো’তে (Didi Ke Bolo) ফোন করে পুলিশের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ
তার নাম সুমিত্রা ঘোষ। অভিযোগ আসতেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে রাজ্য প্রশাসন। তড়িঘড়ি বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগারওয়াল এর নেতৃত্বে কীর্ণাহার থানার ওসি শেখ আসরাফুলের বিরুদ্ধে শুরু হয় তদন্ত। অভিযোগ (Didi Ke Bolo) মিলতেই ওই মহিলা এবং তার স্বামীকে ডেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনেছেন এসডিপিও।
প্রথমে বিষয়টি (Didi Ke Bolo) খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়কে। এরপর তৎপরতার সাথে এই কেসের তদন্তে নামেন বোলপুরে এসডিপিও রিকি আগারওয়াল। জানা গেছে অভিযুক্ত মহিলার স্বামী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই বাড়ি তৈরীর কাজে হাত দিয়েছিলেন। আর সেই অপরাধেই তাকে শেখ আসরাফুল থানায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
১৪৪ ধারা অমান্য করার অপরাধে তার কাছে এক লক্ষ টাকা দাবিও করেন ওসি। শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে ২০ হাজার টাকায় রফা হলেও প্রতিশ্রুতি মতো পুরো টাকা দিতে পারেননি রবীন্দ্রনাথ। তারপর টাকা না দেওয়ার জন্য তাকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে চব্বিশ ঘন্টা আটকে রাখা হয় এবং সাথে চলে প্রচন্ড মারধর।
তাই বাধ্য হয়ে সেই সময় ‘দিদিকে বলো’তে (Didi Ke Bolo) ফোন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী সুমিত্রা। ঘটনার সূত্রপাত হয় বাড়ি তৈরির সময় জমি-জায়গা নিয়ে প্রতিবেশীর সাথে বিবাদ নিয়ে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার প্রতিবেশীর বিবাদকে কেন্দ্র করে সে সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন : বাঙালি নেতার মুকুটে নয়া পালক! আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন BJP-র সুকান্ত মজুমদার
পরবর্তীতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কার্যে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল বোলপুর মহকুমা আদালত। যদিও ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই প্রতিবেশীর সাথে সমস্যা মিটিয়ে নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। আর তারপরেই তিনি বাড়ি তৈরীর কাজে হাত দিয়েছিলেন। তখনই তাকে থানায় ডেকে পাঠান কীর্ণাহার থানার ওসি আসরাফুল ইসলাম।
রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় তিনি নাকি ১৪৪ ধারা অগ্রাহ্য করে বাড়ি করছেন। তাই এই অপরাধে তাকে তার কাছে এক লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ সরাসরি জানান তিনি অত টাকা দিতে পারবে না কিন্তু কুড়ি হাজার টাকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও দশ হাজার টাকা দেওয়ার পর বাকি টাকা আর দিতে পারেনি। তাই তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। যদিও ওসি শেখ আসরাফুল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছিলেন বলে ডেকেছিলাম৷ পুলিশ তুলে নিয়ে এসেছে বলে সম্মানে লেগেছে।’