মালিয়া, নীরব অতীত, প্রকাশ্যে এলো ভারতের সবথেকে বড় স্ক্যাম, ২৮ টি ব্যঙ্ক থেকে ২২,০০০ কোটি টাকার দুর্নীতি

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্নীতি মামলার তদন্তভার হাতে নিয়ে অভিযোগ দায়ের করল সিবিআই (CBI)। এই দুর্নীতির অভিযোগে গুজরাটের জাহাজ নির্মাতা সংস্থা এবিজি শিপইয়ার্ড (ABG Shipyard) এবং তার সহযোগী কোম্পনিগুলিকেই কাঠগড়ায় তুলেছে সিবিআই। মামলা দায়ের করা হয়েছে উক্ত সংস্থার শীর্ষ ও অজ্ঞাতপরিচয় আধিকারিকদের বিরুদ্ধে।ভারতের ইতিহাসে ঘটা সবচেয়ে বড় এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। এই দুর্নীতির ঘটনায় মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট সহ আরও কয়েকটি রাজ্যের ১৩টি এলাকায় শনিবার তল্লাশি চালিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই।

জানা যাচ্ছে, ২০২০ সালের ২৫ আগষ্ট জালিয়াতির শিকার হওয়া সব ব্যাঙ্ক গুলির পক্ষ থেকে সিবিআইয়ের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মুম্বাই শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বালাজি সিংহ সামান্থা। তারপরই বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে সিবিআই। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে সুরাটের জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতি সংস্থা এবিজি শিপইয়ার্ড, এবিজি ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড, সংস্থার ডিরেক্টর অমলেশ আগরওয়াল, কার্যনির্বাহী নির্দেশক সান্থারাম মুহুস্বামী, অন্যান্য ডিরেক্টর সুশীল কুমার আগরওয়াল, রবি বিমল নিবেদিতা ছাড়াও অন্যান্য অজ্ঞাতপরিচয় আধিকারিকদের নামও।

এই জালিয়াতিতে ফৌজিদারি ষড়যন্ত্র, প্রতারণা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও সরকারি সম্পত্তি প্রতারণার মাধ্যমে হাতানোর মত গুরুতর ধারায় মামলা রজু করেছে সিবিআই। এই অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদন্ডও হতে পারে অপরাধীদের। ভারতের মোট ২৮ টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে বিপুল টাকার জালিয়াতি করে ওই সংস্থা। যার মধ্যে আইসিআইসিআই (ICICI) ব্যাঙ্ক থেকে ৭ হাজার ৭৯ কোটি টাকা,এছাড়া আইডিবিআই (IDBI) ব্যাঙ্কের ৩ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা, এসবিআই (SBI) ব্যাঙ্কের ২হাজার ৯২৫ কোটি টাকা, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার (Bank of Boroda) ১ হাজার ৬১৪কোটি টাকা এবং পাঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্কের (PNB) ১ হাজার ২৪৪ টাকা জালিয়াতি করা হয়।

abg cbi

জানা যাচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি থেকে ঋণ ছাড়াও বিপুল পরিমান বিভিন্ন ক্রেডিটের সুবিধা নিয়েছিল ওই সংস্থা। এই টাকা বিদেশে তাদের সহায়ক কোম্পানিগুলিকে পাঠিয়ে বিভিন্ন শেয়ার কেনা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। যে কাজের কথা বলে ঋণ নেওয়া হয়েছিল তা কখনওই না করে বদলে ওই টাকা দিয়ে অন্য কাজ করা হয়েছে বলেই সিবিআইয়ের দাবি।

প্রসঙ্গত, এর আগেও পাঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্ক (PNB) থেকে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি করে ফেরার হন মেহুল চোকসি। অন্যদিকে ১৭ টি ভারতীয় ব্যাঙ্ক থেকে ৯ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি করেন বিজয় মাল্য। লন্ডনে পালিয়ে যাওয়ায় তিনি এখনও অধরা পুলিশের থাকে। এই দুটি মামলারও তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই।

 


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর