‘প্রাণঘাতী’ জিআই সেপসিসে ভুগছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়! কীভাবে হয় এই রোগ? বাঁচার উপায়ই বা কী?

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পেটে ব্যথা, বমির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বর্তমান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijeet Gangopadhyay)। তিন দিন হয়ে গেল আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখনও আইসিইউতেই রয়েছেন তিনি। তাঁকে সঙ্কটমুক্ত বলতে পারেননি চিকিৎসকরা। জানা গিয়েছে, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সেপসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijeet Gangopadhyay)।

জিআই সেপসিসে আক্রান্ত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijeet Gangopadhyay)

জানা গিয়েছে, এই জিআই সেপসিস এমনই এক রোগ যা আচমকাই হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়ে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করে যাতে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই রোগে! জানা গিয়েছে, এই রোগ প্রথমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আক্রমণ করে। তারপর বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গে যুক্ত থাকা তন্তুরও ক্ষতি করতে শুরু করে। এর জেরে ক্রমে বিকল হতে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।

Abhijeet Gangopadhyay is suffering from gi sepsis disease

কীভাবে হয় এই রোগ: গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট প্রদীপ্তকুমার শেঠি এ বিষয়ে জানান, এই রোগ দীর্ঘকালীন নয়। হঠাৎ করেই আসে এবং মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। শরীরে অতিমাত্রায় যদি কোনো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তবে এই রোগ হতে পারে বলে জানান তিনি (Abhijeet Gangopadhyay)। গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট বলেন, অতিমাত্রায় সংক্রমণ ছড়ালে প্রদাহও অতিরিক্ত বেড়ে যায়। এর সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায়। এক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ শক্তি লড়াই করার পরিবর্তে এমন পরিস্থিতি তৈরি করে যা রোগীর পক্ষে অত্যন্ত সঙ্কট জনক হয়ে ওঠে।

আরো পড়ুন : প্রথম বার রথ বেরোবে দিঘায়, প্রত্যেক বিধায়ককেও নিজের এলাকায় রথযাত্রা উৎযাপন করতেই হবে! বিশেষ নির্দেশ মমতার

মারাত্মক হতে পারে দুর্ঘটনা: কীভাবে হতে পারে সেপসিসের সংক্রমণ? চিকিৎসক জানাচ্ছেন, শ্বাসপ্রশ্বাস বা ত্বকের রন্ধ্রপথে ঢুকতে পারে জীবাণু। তবে খাদ্যনালীর মাধ্যমে শরীরে ঢুকে যদি সংক্রমণ ঘটায় তবেই তাকে জিআই সেপসিস বলা হবে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা, সংক্রমণ হলে তা নিজে থেকে সেরে যায়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সংক্রমণ এতই ছড়াচ্ছে যে তা বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঙ্গে যুক্ত ধমনীগুলিকে নষ্ট করে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে একাধিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরো পড়ুন : অভাবের তাড়নায় বিক্রি করেন সরকারি ট্যাব, ইউটিউবের শিক্ষায় NEET-এ দুর্দান্ত সাফল্য সুন্দরবনের বিদিশার

গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট জানাচ্ছেন, যাঁরা ৬০ পেরিয়েছেন, অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত বা ক্যানসার হয়েছে, চিকিৎসা চলছে, তাঁদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। কারণ এ সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। চিকিৎসক জানান, যত্রতত্র বাইরের খাবার না খাওয়া, বাইরের জল, কাটা ফল না খাওয়া উচিত। সেপসিস ৬ ঘন্টার মধ্যেই মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলেও জানান তিনি। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijeet Gangopadhyay) বয়স এখন ৬৩, তাই তাঁরও শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বয়সের নিয়মে কমেছে বলে মত চিকিৎসকদের।

Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।