বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ফের একবার চাঞ্চল্যকর মোড়। নতুন একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ফের সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বসলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। একইসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী এবং দালালদের উদ্দেশ্যে এদিন তিনি একাধিক মন্তব্য করেন, যা নিয়ে ইতিমধ্যে তোলপাড় হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শুরু করে প্রাথমিক টেট এবং অন্যান্য একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মতো একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা এবং শিক্ষা আধিকারিকরা জেল হেফাজতে। একইসঙ্গে, এই সকল মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক নির্দেশ ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি আর এর মাঝে এদিন ফের একবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বসলেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সম্প্রতি একটি প্রস্তাব রাখে স্কুল সার্ভিস কমিশন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরির বিষয়ে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক রূপটি তুলে ধরের পাশাপাশি তিনি বলেন, “কারোর চাকরি যাক, এটা উচিত নয়। নিয়ম বহির্ভূতভাবে যাদেরকে চাকরি প্রদান করা হয়েছে, তাদের কথা ভেবে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। যদিও এক্ষেত্রে সে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।”
এই বিষয়ে একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যারা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছে, সেই সকল অযোগ্যদের জন্য শূন্যপদ তৈরি করতে আদালতে আবেদন করে এসএসসি। আমি জানতে চাই, কার নির্দেশে এই আবেদন করা হয়েছে? কার মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়েছে এটা? তার নাম আমি জানব। এই বিষয়টিতে আজ থেকেই তদন্ত করবে সিবিআই।” পরবর্তীতে অভিজিৎবাবু আরো বলেন, “কিছু দালাল এবং আরো বেশ কিছু মন্ত্রীর নাম আমি জানি, যারা কারোর চাকরি যাবে না বলে দাবি করে আসছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সবাই লড়াই করছি। তাই বর্তমানে অযোগ্যদের চাকরির প্রদান করার বিষয়ে কে বা কারা নির্দেশ দিয়েছে, তাদের নাম জানা প্রয়োজন।”
একইসঙ্গে আগামীকাল শিক্ষা সচিব মনিশ জৈনকে আদালতে আসার নির্দেশ দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যদি শিক্ষামন্ত্রী কিংবা অন্য কোন দালাল আসতে চায়, তাহলে তাকেও স্বাগত জানাই।” শেষে কমিশনের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, “যে সকল শিক্ষকরা পদচ্যুত হয়েছেন, তাদের নামে কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি বলে আপনারা উল্লেখ করেছেন। তবে তখন অভিযোগ জানানোর কোনরকম ব্যবস্থা ছিল কিনা, সে বিষয়টিও বলতে হবে।”
ফলে এদিন হাইকোর্টের নির্দেশে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, সিবিআই তদন্তের নির্দেশের মাধ্যমে কোন বার্তা দিতে চাইলেন অভিজিৎবাবু? এক্ষেত্রে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের পুনরায় শিক্ষকের চাকরিতে নিয়োগ করার বিচার কার মস্তিষ্কপ্রসূত, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে দেওয়ার মাধ্যমে বিতর্ক যে আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেল, তা বলাবাহুল্য।