বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আদালতের কক্ষ ছেড়ে সোজা রাজনীতির ময়দান! চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। এরপর থেকেই মাথাচাড়া দিয়েছে একাধিক বিতর্ক। কেউ তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, কেউ আবার আশাহত হয়েছেন।
বিজেপিতে (BJP) যোগদানের পর বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিতের দেওয়া রায় নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও নিশানা করতে ছাড়েনি। হাই কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে কেন রাজনীতির আঙিনায় পা রাখলেন অভিজিৎ? অতীতে একাধিকবার সংবাদমাধ্যমের কাছে সেকথা জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেন বিতর্ক কমছে না। এবার সমাজমাধ্য়মে দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করলেন বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate)।
My birthplace, my beloved State of West Bengal, was once recognised as a centre of culture, commerce, and creative expression.
From the fertile Gangetic Plain in the south to the Himalayan region in the north, nature has blessed the State with abundance.
The people of West… pic.twitter.com/X4FdmrRzfo— Abhijit Gangopadhyay (@Abhijit_G4WB) April 3, 2024
বুধবার সকালে নিজের এক্স (X) হ্যান্ডেলে একটি লম্বা পোস্ট করেন অভিজিৎ। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার জন্মভূমি, আমার প্রাণের পশ্চিমবঙ্গ, একসময় সংস্কৃতি, বাণিজ্য, সৃজনশীলতার পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত ছিল। দক্ষিণের উর্বর গাঙ্গেয় ভূমি থেকে শুরু করে উত্তরের হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল, প্রকৃতি দু’হাত ভরে এই রাজ্যকে আশীর্বাদ দিয়েছে। এখানকার মানুষ চিরকার ঐশ্বর্যের থেকে জ্ঞানের মহিমাকে প্রাধান্য দিয়েছে’।
তবে বর্তমান সরকারের অপশাসনের দৌলতে গোটা রাজ্যে দুর্নীতির কালো ছায়া নেমে এসেছে বলে দাবি করেন অভিজিৎ। যার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে জীবনের প্রত্যেকটি স্তর এবং সম্মিলিতভাবে নেমে এসেছে এই রাজ্যের মর্যাদা।
আরও পড়ুনঃ ‘TMC-র বিরুদ্ধে আমিই লড়েছি’! মন্তব্য দিলীপের, শুভেন্দুর জবাব, ‘ঝগড়া লাগানোর চেষ্টা করছেন’!
অভিজিৎ লেখেন, ‘একসময় যে রাজ্য শিল্পায়নের কেন্দ্র ছিল, প্রচুর কর্মসংস্থান হতো এখানে। যে কারণে দেশের অন্যান্য জায়গায় এই রাজ্যের স্বতন্ত্র পরিচিতি ছিল। কিন্তু এখন সেই রাজ্যই অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে আছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা এই রাজ্যের সবচেয়ে বড় রপ্তানির বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছেন’।
তমলুকের বিজেপি প্রার্থী লেখেন, ‘তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্ত ইকোসিস্টেম সম্পূর্ণ রাজ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানকার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ, যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ সব…। যোগ্যতা নয়, আর্থিক সামর্থ্য এখন বাছাইয়ের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ম এবং প্রোটোকলের কারণে অনেক সময় উচ্চ আসনে বসেও আমায় চুপ থাকতে হয়েছে। যা আমার বিবেককে দংশন করছিল। সেই কারণে আমি আমার পথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিই। আমি এমন একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি যার দ্বারা আমি রাজ্যের নৈতিক, আর্থিক এবং সাংস্কৃতিক অবক্ষয় বন্ধের লড়াইয়ে যোগদান করতে পেতেছি। যা কিনা দীর্ঘকাল রাজ্যকে জর্জরিত করে রেখেছে’।
দীর্ঘ পোস্টের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অভিজিৎ। কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি লিখেছেন, ‘আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তমলুক থেকে লড়াইয়ের সুযোগ দেওয়ার জন্য সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সভাপতি শ্রী জেপি নাড্ডাকে আমি ধন্যবাদ জানাই।