বাংলাহান্ট ডেস্ক : এই দু’বছরে অনেকটাই বদলেছে তৃণমূল। বদল এসেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েও (Abhishek Banerjee)। ২০১৯ সালে শেষ যেবার ২১ জুলাই-এর সমাবেশ হয়েছিল সেইবার অভিষেক ছিলেন যুব তৃণমুলের সভাপতি। তৃণমূলও তখন দুবার রাজ্যের ক্ষমতা দখলকারী রাজনৈতিক দল। সেই তৃণমূল আজ অনেকটা পরিণত। সময় ও দায়িত্বের ভারে পরিণত হয়েছে অভিষেকও। সেই পরিণত অভিষেকই আজ একুশের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে আরও একবার সরব হলেন।
শহীদ ফলকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এদিন একুশের মঞ্চে উঠলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর ১২টা নাগাদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এসে পৌঁছন তৃণমূলের শহিদ স্মরণের মঞ্চে। পরনে গাঢ় নীল রঙের পাঞ্জাবি, গলায় সাদা উত্তরীয়। অভিষেক মঞ্চে উঠেই মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচু করে করে অভিবাদন জানান জনতাকে। মঞ্চে তখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যেই অভিষেক মঞ্চে ওঠায় এক মিনিটের জন্য থামতে হল সুদীপকে। কারণ অভিষেককে দেখে তখন করতালিতে ফেটে পড়েছে ধর্মতলা চত্বর। অভিষেকের যেন নতুন করে অভিষেক হলো। আর তারপরই শুরু হলো ‘অভিষেক’ নামক ঘূর্ণীঝড়।
তৃণমূলের একুশের শহীদ সমাবেশ থেকে দিল্লির সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, ‘বাংলার প্রকল্প হবে বাংলার নামে, না হলে লাগবে না কেন্দ্রের টাকা।’
‘বাংলা আবাস যোজনা’র নাম থেকে ‘বাংলা’ সরিয়ে লাগাতে হবে ‘প্রধানমন্ত্রী’। আর তা না করলে না হলে এই প্রকল্পে আর এক টাকাও দেওয়া হবে না রাজ্য সরকারকে। নবান্নকে চিঠি দিয়ে হুঁশিয়ারি দেয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। তা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সেই একই ইস্যুতে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা, বাংলা আবাস যোজনায় টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। বাংলাকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। আমি চাই আপনারা টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিন। বাংলাকে অপমান করাই যে আপনাদের কাজ তা সকলের সামনে তুলে আনবো আমি।’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক আরও বলেন, ‘বাংলা আপনাদের কাছে হাত পাতবে না। বাংলা থেকে বাংলার টাকা বাংলার কাছে যাবে। দিল্লির কাছে হাত পাততে, মেরুদণ্ড বিক্রি করবো না আমরা। আমাদের এটাই পুঁজি। অন্য দলের মতো আমরা আত্মসমর্পণ করিনি, করবও না। প্রধানমন্ত্রীর নামে করলে টাকা দেব। প্রকল্প হলে বাংলার নামেই হবে। নইলে টাকার দরকারই নেই। মমতা যদি দেড় কোটি গৃহবধূর পরিবারকে লক্ষীর ভাণ্ডারের টাকা দিতে পারে, তবে বাংলা আবাস যোজনাও হবে। দিল্লির দয়ায় বাংলার মানুষ বেঁচে নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে কেউ না খেয়ে রয়েছেন কি? কারও উপর করের বোঝা চাপাননি। তাও বাংলায় উন্নয়ন হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও একটু সময় দিন। আমাদের টাকাতেই রাস্তা হবে।’