বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলার ১০৮ টি পুরসভার ফলপ্রকাশ হয়েছে গতকাল। বলাই বাহুল্য সবুজ ঝড়ে রীতিমতো উড়ে গিয়েছে বিরোধী দলগুলি। সিপিএমের ঝুলিতে একটি মাত্র পুরসভা থাকলেও খাতাও খুলতে পারেনি বিজেপি এবং কংগ্রেসের মতন তাবড় বিরোধী দল। এই বিপুল জয়ের পর মুখ খুলেছেন তৃণমূলের প্রায় সকলেই। অভিনন্দন বার্তা জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে স্পিকটি নট। জয়ের পরও কোনও রকম প্রতিক্রিয়াই ব্যক্ত করতে দেখা যায়নি তাঁকে। না কোনও ট্যুইট না কোনও প্রতিক্রিয়া কিছুই মেলেনি অভিষেকের তরফে। যা কিনা খানিকটা অস্বাভাবিকই ঠেকছে পর্যবেক্ষক মহলের চোখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক প্রবীন নেতার দাবি, অভিষেকের এই নীরবতাই প্রমাণ যে এখনও দলের মধ্যে রয়ে গেছে অসন্তোষ। পুরভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে শুরু হওয়া টানাপোড়েন যে এখনও শেষ হয়নি এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। পুরভোটে প্রার্থী তালিকা বদল, আইপ্যাকের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে দলের একাংশের মধ্যে তৈরি হয় তীব্র অসন্তোষ।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সীদের বানানো তালিকাকেই চূড়ান্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন মমতা। কিন্তু সেই প্রার্থী তালিকা নিয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তোলেন যে প্রার্থীদের মধ্যে মৃত ব্যক্তিও রয়েছেন। এছাড়াও কিছু ভুল রয়েছে সংরক্ষণেও। এরই মধ্যে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত করেন যে অভিষেকের প্রশ্রয়েই দল ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন বহু নেতা।
এমনকি অভিষেকে এক ব্যক্তি এক পদ নীতিকে নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হয় রাজ্যে। যুব তৃণমূল নেতারা এই মতকে সমর্থন করলেও তীব্রভাবে বিরোধীতা আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বরিষ্ঠ নেতাদের তরফে। অভিষেককে জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।এরই মধ্যে এখন নির্দল প্রার্থীদের দলে ফেরাবে কি না তৃণমূল তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এই ব্যাপারে অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবেই ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘এখনই ফেরানো ঠিক হবে না।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী ৮ মার্চ নজরুল মঞ্চে দলীয় নেতাদের একটি বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে নতুন কমিটি গঠন হতে পারে বলেই দাবি অনেকের। সেখানে যে বদলাতে চলেছে অনেকের অন্দরের রসায়নই তেমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল। তাই আপাতত মনে করা হচ্ছে ওই বৈঠকের কারণেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন অভিষেক। গোটা ব্যাপারটিই বেশ গুরুতর রকম ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মত নিন্দুকদের।