বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি (SSC) মামলায় শুরু থেকেই ক্রমশ অস্বস্তি বাড়তে শুরু করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ওপর আর গতকাল সকালে এই মামলায় ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হন পার্থ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। বর্তমানে এই মামলায় শোরগোল পড়েছে বাংলার সর্বত্র আর এর মাঝে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) দল।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, গতকালই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল থেকে বহিষ্কারের পক্ষে মত প্রকাশ করেন তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শেষপর্যন্ত পার্থর পাশেই দাঁড়ায় দল। তবে ইতিমধ্যেই এই মামলায় তৃণমূলের অন্দরে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তৃণমূল কংগ্রেস কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকে নজর ছিল সকলের। পরবর্তীতে সাংবাদিক সম্মেলন করে শিল্পমন্ত্রীর পাশেই দাঁড়ায় দল। তবে বর্তমানে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, গতকালের ঘটনায় পার্থের বিরুদ্ধে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের একটি অংশ। পরবর্তীতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে দলীয় বৈঠকে তৃণমূল মহাসচিবকে দল থেকে বহিষ্কার করার ব্যাপারেও মত প্রকাশ করেন তারা। তবে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শেষপর্যন্ত পার্থর পাশেই দাঁড়ায় দল। এ প্রসঙ্গে বর্তমানে আইন ব্যবস্থার উপরেই ভরসা রেখে চলেছে শাসক দল।
উল্লেখ্য, গতকাল ইএসআই হাসপাতাল থেকে আদালতে যাওয়ার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, “নেত্রীকে ফোন করে পাইনি।” এরপরেই জল্পনা উঠতে শুরু করে যে, তবে কি পার্থকে বহিষ্কার করার পথে দল? তবে পরবর্তীতে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর পাশেই দাঁড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য, “আমাদের বিচার ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। যদি দোষ প্রমাণিত হয়, তবে দলগত ও সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে যদি ষড়যন্ত্র হয়, তবে আমরা প্রতিবাদে নামবো।”
সূত্রের খবর, গতকাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দলের একটা বৃহৎ অংশ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল থেকে বহিষ্কার করার ব্যাপারে সওয়াল করলেও পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই পার্থের পাশে থাকে TMC। এক্ষেত্রে পার্থর মত শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিলে তা দলের বিরুদ্ধে যাবে বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল গ্রেফতারির পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে তোলা হলে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি এবং পরবর্তীতে তৃণমূল নেতাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তবে ইতিমধ্যেই এই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির আবেদন জানিয়েছে ইডি। এক্ষেত্রে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইএসআই কিংবা এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতি তারা। তবে এদিন শুনানির পর কলকাতা হাইকোর্ট কি রায় দেয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।