‘বিচারপতি মান্থাকে অভিষেকের ব্যক্তিগত আক্রমণ বাংলার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে’, বিস্ফোরক আইনজীবী প্রীতি কর

বাংলা হান্ট ডেস্ক : গণতন্ত্র! গণতন্ত্র! গণতন্ত্র! বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের অংশ হওয়ার গর্ব রয়েছে প্রত্যেক ভারতবাসীর মধ্যে। ইতিহাস সাক্ষী, ভারতের (India) বুকে এই গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়েছে প্রাচীনকালেই। ষোড়শ মহাজনপদের সময়ই পাওয়া যায় গণতন্ত্রের অস্তিত্ব। কিন্তু সুপ্রাচীন এই ভারতীয় গণতন্ত্র মাঝেমধ্যেই বিতর্কের কাঁটায় বিদ্ধ হয়। আর সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র (Democracy in West Bengal) আরও একবার দাঁড়িয়ে পড়েছে বিরোধীদের কাঠগড়ায়।

বাংলা হান্ট পরিচালিত কনক্লেভ ২০২৩-এ বিতর্ক সভার মূল বিষয়ই ছিল পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের অবস্থা। এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইনজীবি থেকে শুরু করে প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিকদের মতো সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এই মঞ্চে নিজের বক্তব্য পেশ করেন বিশিষ্ট আইনজীবী প্রীতি কর। গণতান্ত্রের বেহাল দশা নিয়ে বড়তমান শাসক দলকে কার্যত ধুয়ে দিলেন প্রীতি।

   

এদিন প্রীতি কর বলেন, ‘গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভ। চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম। হয়ত সরকারি ভাবে স্বীকৃত নয়, কিন্তু তাই বলে এই মাধ্যমকে আমরা সরিয়ে দিতে পারব না। আজ গোটা বিশ্বে যা ঘটছে তা মিডিয়া না থাকলে হয়ত আমরা কোনও দিন জানতেও পারতাম না। শুধু তাই নয়, আজ বাংলা হান্ট যে সুযোগটা আমাদের দিয়েছে সেটা না দিলে হয়ত আমরা এখানে বসে আলোচনাও করতে পারতাম না।’

এদিন প্রীতি বলেন, ‘গণতন্ত্রের ৪ স্তম্ভের মধ্যে প্রথম যে বিষয়ে আলোচনা করব তা হল বিচার ব্যবস্থা। আজ গণতন্ত্র রক্ষায় সবাই আক্রান্ত। সেখানে কিন্তু বিচার ব্যবস্থাও পিঠ বাঁচাতে পারছে না। রেহাই নেই বিচারপতিদেরও। আমি বরাবর এই বিষয় নিয়ে সরব থেকেছি। তাই আজও কোনও রাখঢাক করে বলব না। বিচারপতির রায়ের উপর ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা প্রকাশের একটা সীমা থাকা উচিত।’

এদিন প্রীতি রীতিমতো হুংকার করে বলেন, ‘বিচারপতিদের যে যেভাবে বলেছে তাকে সেভাবেই আমি উত্তরটা দেব।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু বছর আগে বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে বর্তমান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিভাবে কুৎসা করেছিলেন। তিনি কিভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন। তিনি কী বলেছিলেন আজ তা বলব না, কারণ তা বলার মত নয়।’

এরপরই প্রীতি কাঠগড়ায় তোলেন তৃণমূলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগেই এসএসকেএম-এ দাঁড়িয়ে বিচারপতি রাজশেখর মান্থাকে সরাসরি ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের অভিযোগ বিচারপতি মান্থা নাকি বিশেষ কিছু ব্যক্তিকে রক্ষাকবচ দিচ্ছেন।’

আইনজীবী আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিচারপতি মান্থার বাড়ির সামনে পোস্টার পড়ল। শুধু বিচারপতির বাড়ির সামনেই নয়, গোটা আদালত চত্ত্বরেই সাঁটানো হয় পোস্টার। শুধু তাই নয়, সেদিন বিচারপতির ঘরও বয়কট করা হয়।’

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর