বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ তাড়াতে উদ্যোগী তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। এর জন্য গত বৃহস্পতিবার তৃণমূলের মেগা সভা থেকে একটি বিরাট কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যার প্রথম নাম ছিল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর। এরপরের নামটিই ছিল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। এদিন এই কমিটির প্রথম বৈঠক বসেছিল। তবে সেখানে অনুপস্থিত রইলেন তৃণমূল সেনাপতি।
অভিষেকের (Abhishek Banerjee) অনুপস্থিতি নিয়ে শুরু চর্চা!
গত বৃহস্পতিবারের সমাবেশের পর অনেকেই মনে করেছিলেন, তৃণমূলের সর্বোচ্চ স্তরের ‘দ্বন্দ্ব’ হয়তো মিটে গিয়েছে। তবে আজ মমতার তৈরি করে দেওয়া ভোটার তালিকা কমিটির প্রথম বৈঠকে অভিষেক না আসতেই ফের দেখা দিয়েছে নয়া জল্পনা। তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড কেন এলেন না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত একজন ‘প্রবীণ’ নেতা বলেন, ‘কে এলেন, কে এলেন না জানি না। তবে যিনি আসবেন না, তাঁকে পিছিয়ে পড়তে হবে’।
তৃণমূলের অনেকে অবশ্য অভিষেকের (Abhishek Banerjee) অনুপস্থিতির বিষয়টিকে বড় করে দেখতে নারাজ। তাঁদের দাবি, আজকের বৈঠকেই বলা হয়েছে, আগামী ১৫ মার্চ বিকেল ৪টের সময় দলের সর্বস্তরের নেতৃত্বের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। সেখানে রাজ্য কমিটির সকল সদস্য, সকল জেলা সভাপতি ও শাখা সংগঠনের নেতৃত্বকে যুক্ত হতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভাঙা মানেই তা ধর্ষণ নয়! সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে তোলপাড় দেশ
বুধবার ‘সেবাশ্রয়’ শিবিরের জন্য নিজ লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের অধীন মহেশতলায় হাজির হয়েছিলেন অভিষেক। সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আজ কলকাতাতেই রয়েছেন তৃণমূল (TMC) সেনাপতি। তাহলে কেন বৈঠকে এলেন না? এই বিষয়ে অভিষেক ঘনিষ্ঠ একজন নেতা বলেন, ‘সেবাশ্রয়ের অন্তিম পর্বের কাজ নিয়ে সাংসদ ব্যস্ত। হয়তো সেই কারণেই যেতে পারেননি’।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ স্তরের সমীকরণ নিয়ে যারা কাঁটাছেঁড়া করেন ও নানান আলোচনার জন্ম দেন, গত বৃহস্পতিবারের সমাবেশের পর তাঁদের ময়নাতদন্তে দু’টি বিষয় উঠে এসেছিল। ‘আশাবাদী’রা মনে করেছিলেন, মমতা (Mamta Banerjee) বলেছিলেন, ‘অভিষেক সবটা গুছিয়ে বলেছে’। ফলে সেদিক থেকে দেখলে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যকে কার্যত ‘শিলমোহর’ দিয়েছিলেন দলনেত্রী। আবার ‘সন্দিগ্ধু’দের কথায়, মমতার গড়ে দেওয়া কমিটিতে বাকিদের মতোই নাম রয়েছে অভিষেকের। তাঁকে আলাদা কোনও মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তবে রাজ্য সভাপতির পরেই নাম রয়েছে। ফলে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গেই মমতা সেদিন পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন, ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন মেট্রোপলিটনের তৃণমূল ভবন থেকেই ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কাজ হবে। সেই নির্দেশ নিয়ে অনেকের ব্যাখ্যা, মমতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, দলের দফতর থেকেই দলের কাজ হবে। অন্য কোনও জায়গা (ক্যামাক স্ট্রিট) থেকে তা হবে না। আজ ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কমিটির প্রথম বৈঠকে অভিষেকের অনুপস্থিতির বিষয়টি অনেকে এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও দেখছেন।
এই প্রসঙ্গে একজনের বক্তব্য, ‘মনে রাখতে হবে, ১৫ তারিখ অভিষেক ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। অর্থাৎ তাঁকে সশরীরে তৃণমূল ভবনে আসতে হবে না’। এর পাল্টা আবার অনেকের দাবি, মেট্রোপলিটনের তৃণমূল ভবনে যাওয়া নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের (Abhishek Banerjee) কোনও ছুঁৎমার্গ নেই। বহুবার তিনি সেখানে গিয়েছেন। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীর বাড়ি থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা উদ্ধারের পর সেখানেই দলের নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে পার্থের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন।