রাজ্যে বিজেপি তৃণমূল সদস্যদের মধ্যে সংঘাত নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক পর্ব থেকেই যে ভাবে তৃণমূল ছেড়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে কর্মী সমর্থক এবং সাংসদরা যোগ দিয়েছেন তাতে ক্রমশই দুই দলের নেতৃত্বদের মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই চলছে। বিজেপিতে যাওয়ার পরেই সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন।
এবার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে অভিষেক ব্যানার্জির আয় ব্যয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য হিসেব তুলে ধরলেন সৌমিত্র খাঁ!সংসদ সৌমিত্র খাঁ এর দাবি, অভিষেক ব্যানার্জীর মোট সম্পত্তির পরিমান 1251 কোটি, আর প্রমান হিসেবে তিনি wikipedia এর তথ্যের স্ক্রিনশট তুলে ধরেন !
একজন সংসদ অভিষেক ব্যানার্জী আর তার মোট সম্পত্তি 1,251 কোটি টাকা, এটা সকলকে অবাক করার মতোই। সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এর এই ফেসবুক পোস্ট কার্যত রাজ্য রাজনৈতিক অন্দরে নতুন জল্পনা তৈরি করেছেন। ফেসবুক পোস্টে উইকিপিডিয়া থেকে পাওয়া তথ্যের একটি স্ক্রিনশট নিয়ে শনিবার সৌমিত্র খাঁ তার নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে করা পোস্টে ক্যাপশনে লিখেছেন, “আমি কি ভুল বলেছিলাম? বন্ধু টিএমসি আর বিজনেস স্টাফরা একটু দেখুন। কারণ আপনারা আর কর্মী নন এখন স্টাফে পরিণত হয়েছেন”।
আর নিজের ফেসবুক পেজের পোস্টে ক্যাপসনে লিখেছেন ” তৃণমূলের কর্মীরা দেখুন এখন আর আপনারা পার্টির কর্মী না, অভিষেকের কাজের স্টাফ ! মাত্র ৫ বছরে অভিষেক ব্যানার্জীর ইনকাম 1251 কোটি টাকা ….
ভাবুন ভাবুন এখনো সময় আছে …””সৌমিত্র খাঁ এর এই ফেসবুক পোস্টের পর কার্যত কমেন্ট বক্সে তির্যক মন্তব্যে ভরে উঠেছেন।
যদিও লোকসভা নির্বাচনী পর্বে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি প্রার্থীকেই তাঁর আয় ব্যয়ের হিসেব জমা দিতে হয় সেই সময় মনোনয়নপত্রে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের সাংসদ জানিয়েছিলেন তাঁর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ 71 লক্ষ্য 40 হাজার টাকা। একই সঙ্গে তাঁর কাছে থাকা সোনার পরিমাণ তিরিশ গ্রাম, রূপক চল্লিশ গ্রাম হয়েছে বলে জানান। যদিও এখানেই শেষ নয় স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল প্রায় ত্রিশ লাখ টাকা। এবং মেয়ে আম জানিয়ার সম্পত্তির পরিমাণ দেখানো হয়েছিল প্রায় এক ত্রিশ লাখ টাকা।
অর্থাৎ স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে তিনজনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল এক কোটি ত্রিশ লাখ চুরানব্বই হাজার তিনশো উনিশ টাকা সাতষট্টি পয়সা। পাশাপাশি নিজের নামে বা স্ত্রীর নামে কোনও জমি বা বাড়ি কিছু নেই ফ্ল্যাট নেই এমনকি কোনও দেনা নেই বলে তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল।
পাশাপাশি কালীঘাটের যে বাড়িতে তাঁরা থাকেন সেটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এমনটাও দেখানো হয়েছিল। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনে অর্থাত্ 2014 সালের নির্বাচনের সময় ইলেকশন কমিশনকে অভিষেক সম্পত্তির পরিমাণ জানিয়েছিলেন এক কোটি একান্ন লক্ষ নিরানব্বই হাজার দুশো বাহাত্তর টাকা। সেটি কমে গিয়ে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে এক কোটি সাঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকায় ঠেকেছে বলে জানিয়েছিলেন।
তাই শনিবার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এর ফেসবুক পোস্ট থেকেই যে তথ্য উঠে এসেছে তার পরিমাণ 1251 কোটি টাকা তাই স্বভাবতই নির্বাচনকে কমিশনকে দেওয়া তথ্য এবং উইকিপিডিয়ার তথ্যের মধ্যে কোনও মিল পাওয়া যাচ্ছে না বলেই দাবি করছেন অনেকেই। মনে রাখবেন: কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সম্পত্তির আয় ব্যায়ের হিসেব জানার , কিংবা সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে খবর কভার আমাদের উদ্দেশ্য নয়। শুধুমাত্র প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হলে।