বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার পূর্বে রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি থেকে কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলরা। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে পুরোদমে ঝাঁপাতে চলেছে শাসক দল আর সেই সূত্রেই এদের নেতাজি ইন্ডোরে সংগাঠনিক অধিবেশন আয়োজন করে ঘাসফুল শিবির। সেখান থেকেই এদিন বিরোধীদের কটাক্ষ করে আক্রমণের ঝাঁঝ বহুগুনে বাড়িয়ে তুললেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
উল্লেখ্য, বাংলায় একের পর এক দুর্নীতি মামলা উঠে আসার পাশাপাশি যে মুহূর্তে দলের ভিতর গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে, তখন দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে কি বার্তা দেন মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সেদিকে নজর ছিল সকলের। অবশেষে এদিন বিরোধীদের আক্রমণ করার পাশাপাশি চেনা মেজাজেই ধরা দিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক।
তিনি বলেন, “বর্তমান সময়ে সিপিএমের হার্মাদ এবং বিজেপির জল্লাদ বাহিনী মিলিত হয়েছে। ওরা ক্রমাগত কুৎসা করে চলেছে, কিন্তু এতে কোন লাভ হবে না। আমরা কোন মতেই মাথা নত করছি না আর করবোও না।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুর্গাপুজোয় বাংলার মোট ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে এই বিষয়ে তৃণমূল সরকারের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দেয় বিরোধী দলগুলি। এমনকি, কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হয়। এদিন সেই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “আমরা ১০০ বার অনুদান দেবো। গুজরাটে যদি তিন হাজার কোটি টাকার মূর্তি তৈরি হতে পারে, তাহলে বাংলায় উৎসবকে ঘিরে অনুদান কেন দেওয়া হবে না? বিজেপির আমলে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেখানে আমাদের সরকার মানুষের জন্য পরিশ্রম করে চলেছে।”
সম্প্রতি, অভিষেকের ‘নতুন তৃণমূল’ প্রসঙ্গেও একাধিক বিতর্কের জন্ম নেয়। তৃণমূলের অন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দুটি পৃথক দল তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করতে থাকে বিরোধীরা। এদিন সেই প্রসঙ্গে অভিষেকের সাফ জবাব, “আমাদের দলে কোন রকম লবি নেই। এখানে একটাই লবি রয়েছে এবং সেটি হলো মমতা লবি। আমাদের তৃণমূলে এক, দুই কিংবা তিন নম্বর বলে কিছু নেই। দলের একজন নেত্রী, তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
এর পাশাপাশি এদিন কেন্দ্র সরকারের অনুদান এবং সিবিআই ও ইডি প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা বলেন, “কেন্দ্রের তরফ থেকে বাংলাকে বরাদ্দ টাকা দেওয়া হচ্ছে না। দিলীপ ঘোষরা বরাদ্দ দিতে পর্যন্ত মানা করে দিয়েছে। তবে আমি বলে রাখি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে দিল্লির কাছে বাংলাকে হাত পাততে হবে না। ওরা আমাদের সিবিআই এবং ইডি দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে চলেছে। তবে আমরা কখনোই মাথা নত করব না। বিজেপিকে বাংলা ছাড়া করতে হবে।”