বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার শিরোনামে উঠে এসেছে তৃণমূলের (Trinamool Congress) গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। রাখঢাক না করে স্বীকার করে নিলেন, দলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে।
তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে কী বললেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)?
বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতায় ‘সেবাশ্রয়’ শিবিরে উপস্থিত হয়েছিলেন তৃণমূল (TMC) সেনাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সেখানে দাঁড়িয়েই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। অভিষেক বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকাটা স্বাভাবিক। একইসঙ্গে এও স্পষ্ট করে দেন, দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন।
সম্প্রতি মালদহে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুন হয়েছেন। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন মালদহ শহর তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। ইতিমধ্যেই তাঁকে বহিষ্কার করেছে দল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কালিয়াচকে এক তৃণমূল কর্মী খুন হন। এই ঘটনাতেও ফের শিরোনামে উঠে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এবার এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)।
আরও পড়ুনঃ অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলেও শান্তি নেই! রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে বড় কেলেঙ্কারি! মাথায় হাত গ্রাহকদের
তৃণমূল নেতা বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের সর্বময় নেত্রীও। মালদহের ঘটনায় তৃণমূলেরই একজন নেতা গ্রেফতার হয়েছেন’। অভিষেক বলেন, ‘কখনও দেখাতে পারবেন, উত্তরপ্রদেশের কোনও বিজেপি নেতা অপরাধের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন? আমরা তদন্তের মতো তদন্ত করি। কেউ যদি কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে, সে যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকুক, যে ধর্ম বর্ণের হোক, একজন দোষী দোষীই। অপরাধীর কোনও জাতি অথবা ধর্ম হয় না। আমরা ব্যবস্থা নেব। অপরাধীদের কেউ পার পাবে না’।
এরপরেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে মুখ খোলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, একটি রাজনৈতিক দল যখন বড় হয়, তখন সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকা স্বাভাবিক। সেই সঙ্গেই তাঁর প্রশ্ন, বিজেপিতে গোষ্ঠীকোন্দল নেই? সিপিএম যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন সেই দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল না? ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের কথায়, ‘একটা বাড়িতে যদি ৬ জন থাকে, তাহলে ৪ জনের ঝগড়া হয়। সেখানে একটি দল, যেখানে লক্ষাধিক পদাধিকারী রয়েছেন, সেখানে মনোমালিন্য, মতভেদ থাকতেই পারে। সেটাই স্বাভাবিক’।
দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব থাকলেও, সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে বলে জানান অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘তৃণমূলের একজন বুথ স্তরের কর্মীকে যেমন শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে, তেমনই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাকেও সেই শৃঙ্খলা মানতে হবে। নিজেকে কেউকেটা ভাবলে দলে তাঁর কোনও স্থান নেই’।
অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, ‘জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছেন। যদি কেউ জনগণের কাজ করতে গিয়ে নিজেকে কেউকেটা ভাবেন, তাঁদের জন্য তৃণমূলের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের সবাইকে বিনয়ী হতে হবে, নম্র হতে হবে’। মৌরসিপাট্টা করে তৃণমূল চালাব ভাবলে তাঁদের ‘কপালে বিপদ আছে’ বলে জানিয়ে দেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড।