বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর শেষে ফের শিরোনামে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সূত্র ধরে সামনে এসেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের (Leaps and Bounds) নাম। এই সংস্থারই কর্মচারী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র গ্রেফতার হয়েছে ইডির হাতে। এবার সেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস নিয়ে বড় দাবি ইডি চার্জশিটে।
বহুদিন থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আতস কাঁচের নীচে অভিষেকের লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস। সম্প্রতি প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা ইডি। রিপোর্টে অনুযায়ী, সেই চার্জশিটের শুরুতেই আছে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নাম। দাবি, শুধুমাত্র খাতায় কলমে ব্যবসা হওয়া সত্ত্বেও এক সাইকেল সংস্থা সহ মোট ৫ সংস্থার থেকে কয়েক কোটি টাকা পেয়েছে অভিষেকের লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস।
ED চার্জশিটে দাবি, বৈদ্যুতিক কেটলি, চশমা এবং কার্ডের ব্যবসা সংক্রান্ত ইনভয়েস দেখিয়েছে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস। দেখানো হয়েছে সূত্রে টাকা পেয়েছে সংস্থা। এই ইসুতেই চার্জশিটে এক লক্ষ্মী সাইকেল প্রাইভেটের মালিকের বয়ান দিয়ে ইডি জানিয়েছে ওই মালিক নাকি জানিয়েছেন, তার সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কাছে টাকা গিয়েছে ঠিকই। তবে কোনও ব্যবসা হয়নি তাদের মধ্যে।
চার্জশিটে দাবি, এই লক্ষ্মী সাইকেল প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৪ হাজার ৬৮১ টাকা ঢুকেছে অভিষেকের সংস্থায়। সব মিলিয়ে ৪টি সংস্থা থেকে ২ কোটি ৮৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৩৫ টাকা ঢুকেছে। লক্ষ্মী সাইকেল প্রাইভেট লিমিটেড ছাড়াও নবীন এন্টারপ্রাইজ থেকে ১ কোটি ২৪ লক্ষ ৬৭ হাজার ১৯৭ টাকা, এগজটিক ইনভেনশন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সংস্থা থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ইন্টিগ্রেটেড ইনভেনশন ট্রেডিং সংস্থা থেকে ১০ লক্ষ ৪ হাজার ৫৫৮ টাকা তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইডির দেওয়া চার্জশিটে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের ডিরেক্টর হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেরও উল্লেখ রয়েছে। এই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে কম জলঘোলা হয়নি। এই সংস্থার সূত্র ধরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন অভিষেক। অভিষেকের সংস্থায় চলেছে ইডির ম্যারাথন তল্লাশি।
চলতি বছরই এক প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিষেক দাবি করেন, এখন মিনারেল ওয়াটার তৈরির কাজে যুক্ত আছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানো সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস। সেই সময় অভিষেক বলেছিলেন, এই প্রথম নয়, এর আগে কয়লা পাচার, গরু পাচার মামলার ক্ষেত্রেও লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নাম জুড়ে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও কোনওক্ষেত্রেই তার সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি বলে জোর গলায় দাবি করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ।
আরও পড়ুন: দু’দিন পর থেকেই বদলে যাচ্ছে এই নিয়ম, বড় সিদ্ধান্তের পথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার
উল্লেখ্য, বর্তমানে সেই সংস্থার ডিরেক্টর পদে রয়েছেন অভিষেকের মা, বাবা এবং স্ত্রী। তবে প্রাথমিকভাবে তিনিই ছিলেন লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের ডিরেক্টর। ২০১৪ সালে যখন তিনি ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিট থেকে লড়তে ডিরেক্টর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সিইও।