বাংলাহান্ট ডেস্ক: দেশের দুই বড় ব্যবসায়ী ও ধনকুবের হলেন মুকেশ আম্বানী এবং গৌতম আদানি (Adani and Ambani)। সচরাচর একে অপরের সঙ্গে খোলাখুলি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে দেখা যায় না তাঁদের। তবে এ বার হতে চলেছে তার ব্যতিক্রম। শোনা যাচ্ছে, দু’জনেই খোলাখুলি একটি সংস্থা কেনার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারও এই সংস্থা কিনতে আগ্রহী। কী সেই কোম্পানি যা কেনার জন্য দেশের তাবড় ব্যবসায়ী থেকে সরকার, সবাই মরিয়া হয়ে পড়েছেন?
প্রথমেই জানিয়ে রাখি, যে কোম্পানি নিয়ে এত আলোচনা, সেটি এই মুহূর্তে ঋণে জর্জরিত ও খুব তাড়াতাড়িই নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করতে পারে। অর্থাৎ ভরাডুবিতে রয়েছে সেই সংস্থাটি। এমন একটি লোকসানে চলা কোম্পানি নিয়ে কেন এত চর্চা? সরকার থেকে দেশের কোটিপতিরা এর পিছনে কোটি কোটি টাকা ঢালতে রাজি হয়েছেন কেন?
এই কোম্পানিটির নাম ‘ল্যাঙ্কো অমরকন্টক পাওয়ার’। রিপোর্ট অনুযায়ী, এটি একটি তাপবিদ্যুৎ প্রস্তুতকারী সংস্থা। এই মুহূর্তে এটি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বর এই সংস্থার নিলাম হবে। নিলামে অংশ নিচ্ছেন মুকেশ আম্বানীর রিলায়েন্স গ্রুপ, গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ এবং কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রথম দেশের দুই শ্রেষ্ঠ ধনকুবের ব্যবসায়ী একই কোম্পানি কেনার জন্য দর হাঁকছেন।
কিন্তু মুকেশ আম্বানী কেন এই কোম্পানি কিনতে ইচ্ছুক? রিলায়েন্স তাপবিদ্যুৎ সেক্টরে নিজেদের জায়গা আরও মজবুত করতে চায়। ফলে এই কোম্পানিটি কিনে ফেললে তাদের ‘রিলায়েন্স পাওয়ার’ সেক্টর আরও শক্তিশালী হবে। সে ক্ষেত্রে ‘ল্যাঙ্কো অমরকন্টক’ জুড়ে যাবে রিলায়েন্স পাওয়ারের সঙ্গে। সেই জন্য প্রথম রাউন্ডে সবচেয়ে বেশি দর হেঁকেছেন মুকেশ আম্বানী। জানা গিয়েছে, এই নিলামের প্রথম রাউন্ডে সবচেয়ে বেশি দর হেঁকেছেন রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার।
অন্যদিকে, গৌতম আদানিও এই কোম্পানিটি কিনে নিজেদের তাপবিদ্যুৎ সেক্টরে জুড়ে দিতে চান। সে জন্য তিনিও এটি কেনার জন্য বিপুল দর হেঁকেছেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনিই হয়েছেন সবচেয়ে বড় দরদাতা। এদিকে পিছিয়ে নেই কেন্দ্রীয় সরকারও। সরকারি সংস্থাগুলি মারফত দর হেঁকে দু’টি রাউন্ডেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেন্দ্র। এই সংস্থা কিনতে আদানি দ্বিতীয় রাউন্ডে ২ হাজার ৯৫০ কোটি টাকার দর হেঁকেছেন।
এর মধ্যে ১৮০০ কোটি টাকা অগ্রিম দিয়ে দেওয়া হবে। বাকি ১১৫০ কোটি টাকা আগামী ৫ বছরে মিটিয়ে দেওয়া হবে। অন্যদিকে, রিলায়েন্স ২০০০ কোটি টাকা অগ্রিম দেবে বলে জানিয়েছে। একইসঙ্গে ৩৮৭০ কোটি টাকা PFC-REC কনসর্টিয়ামের মাধ্যমে আগামী ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে। ‘ল্যাঙ্কো অমরকন্টক’ কোম্পানির বিক্রির পদ্ধতি শুরু হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে। ছত্তিশগড়ের কোরবা-চম্পা রাজ্য সড়কে একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে ল্যাঙ্কোর। যেটি কেনার জন্য বর্তমানে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে।