বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে লড়াই আরও গভীর হচ্ছে। শনিবার ইরান ইজরায়েলের উপকূলীয় শহর হাইফা-কে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এদিকে, হাইফা ইজরায়েলের একটি প্রধান বন্দর হিসেবে বিবেচিত হয়। যেখানে ভারতের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির গ্রুপের (Adani Group) উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়াও, হাইফা ইজরায়েলের একটি বড় নৌঘাঁটিও। সেখানে একটি তৈল শোধনাগার এবং একাধিক রাসায়নিক কারখানাও রয়েছে। পাশাপাশি, ইজরায়েলের বৃহত্তম তেল শোধনাগার হাইফা উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এমতাবস্থায়, ইরান ইজরায়েলের তেল শোধনাগার এবং হাইফায় নৌঘাঁটিতে আক্রমণ করে।
ইরান এবং ইজরায়েলের সংঘর্ষে প্রভাবিত হতে পারে আদানি গ্রুপ (Adani Group):
আদানি গ্রুপ ইজরায়েলে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে: জানিয়ে রাখি যে, হাইফা বন্দরের পাশাপাশি, আদানি গ্রুপ (Adani Group) প্রতিরক্ষা খাতেও বিনিয়োগ করেছে। আদানি গ্রুপ একটি যৌথ উদ্যোগে ইজরায়েলের হাইফা বন্দর কিনেছিল। আদানি গ্রুপের যৌথ উদ্যোগ ২০৫৪ সাল পর্যন্ত এই বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। এই যৌথ উদ্যোগে আদানি পোর্টের ৭০ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে এবং ইজরায়েলি রাসায়নিক ও সরবরাহ সংস্থা গ্যাডোটের ৩০ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে। সোমবার আদানি গ্রুপের শেয়ারের ওপর এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।

শেয়ারে পতন: ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে আদানির বিনিয়োগ হুমকির মুখে রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। শুক্রবার আদানি গ্রুপের (Adani Group) শেয়ারে এর প্রভাব দেখা গেছে। আদানি গ্রুপের লাভজনক কোম্পানি আদানি পোর্টসের শেয়ারের দাম ৩ শতাংশেরও বেশি কমে ১,৩৯৬ টাকায় পৌঁছে যায়। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ২.৭১ শতাংশ কমে ১৪০৫.২৫ টাকায় বন্ধ হয়েছে। এদিকে, আদানি গ্রুপের প্রধান কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারও লেনদেনের সময় ২.৮ শতাংশ কমে ২৪৬৯.৫৫ টাকায় পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত এটি ১.৩৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২৫০৫.৬৫ টাকায় বন্ধ হয়।
আরও পড়ুন: WTC ফাইনাল না খেলেও জ্যাকপট পেল টিম ইন্ডিয়া! কোটি কোটি টাকার পুরস্কার দিল ICC
আদানির হাইফা বন্দর একাধিক ঝুঁকির সম্মুখীন: হাইফা বন্দরে এহেন আক্রমণের জেরে পণ্য পরিবহণের বিলম্ব হতে পারে এবং জাহাজের রুট পরিবর্তন হতে পারে। এর আগে, ইজরায়েলের দক্ষিণ অংশে আরও বেশি যুদ্ধ হয়েছিল এবং উত্তর অংশে অবস্থিত হাইফাকে নিরাপদ বলে মনে করা হত। কিন্তু, এবার ইরান হাইফাকে টার্গেট করেছে। এমতাবস্থায়, যদি এই লড়াই দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে পুরো ভূমধ্যসাগরীয় বাণিজ্য রুট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে কাজ এবং পণ্য পরিবহণে সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন: “কিছুজন আমাদের সন্দেহ করেছিলেন, এই ট্রফি তার উত্তর”, সমালোচকদের নিশানা করে কী জানালেন বাভুমা?
অংশীদারিত্বের পরিমাণ: আদানি গ্রুপের (Adani Group) হাইফা বন্দর ইজেরায়েলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়। আদানি পোর্টস, ইজরায়েলের গ্যাডোট গ্রুপের সাথে, ২০২৩ সালে ১.২ বিলিয়ন ডলারে ওই বন্দরের ৭০ শতাংশ ভাগ কিনে নেয়। যেটি আদানি পোর্টসের বার্ষিক কার্গো ভলিউমের প্রায় ৩ শতাংশ অবদান রাখে। পাশাপাশি, এই বন্দর ইজরায়েলের আমদানি ও রফতানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগেও, যখন এই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছিল, তখন আদানি পোর্টসের শেয়ারে পতন হয়েছিল। পাশাপাশি, ওই বন্দরে যাতায়াত করা জাহাজগুলি অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এখানে দীর্ঘ সময় ধরে উত্তেজনা অব্যাহত থাকে, তাহলে তা আদানি গ্রুপের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: